ফের শহর কলকাতায় ডেঙ্গুর কবলে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। মৃতের নাম অনির্বাণ হাজরা। পেশায় তিনি ছিলেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সহকারী সুপার। শুক্রবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনার পর যথারীতি ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁর আত্মীয় পরিজন।
হাওড়ার বাসিন্দা অনির্বাণ হাজরার মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪২ বছর। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ায় গত ১ নভেম্বর তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল বেলেঘাটা আইডিতে। চিকিৎসা চলাকালীন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেবেলা থেকেই হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। প্লেটলেট ১৬ হাজারে নেমে আসে। এরপর প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন করার পর পরিস্থিতি সাময়িক নিয়ন্ত্রণে আসে।
কিন্তু, শুক্রবার সকালে ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় অনির্বাণের। হৃদযন্ত্র এবং রক্তচাপজনিত সমস্যা শুরু হয়। দ্রুত তাঁকে সিসিইউতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু হলেও শেষ রক্ষা হল না। হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ভাইফোঁটার সময় অনির্বাণের কন্যাও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। এমনকি, কোভিডের সময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন অনির্বান। দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হন তিনি।
বেলেঘাটা হাসপাতালের সহকারী সুপার ছাড়াও বাম রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন অনির্বাণ হাজরা। সর্বভারতীয় বাম ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্তন সংগঠক তথা ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রাক্তন সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০৮-২০১২ সাল পর্যন্ত SFI পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির মুখপত্র ছাত্রসংগ্রাম পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক ছিলেন অনির্বাণ হাজরা।
তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করেছেন অসংখ্য বাম নেতা, কর্মী এবং সমর্থকরা। এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য্য শোক প্রকাশ করে জানান, "ছাত্রসংগ্রাম পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক কমঃ অনির্বাণ হাজরার অকস্মাৎ হৃদরোগে জীবনাবসান হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ভাবা যাচ্ছে না।"
উত্তর থেকে দক্ষিণ রাজ্যের সর্বত্র লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। তবে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এবার ডেঙ্গুর সাথে চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়াও। রাজ্য সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, শেষ দু'মাসে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।