প্রকাশ্য রাস্তায় বিবাদে জড়ালেন তৃণমূলের বাবুল ও বিজেপির অভিজিৎ, গালিগালাজ-হামলার অভিযোগ

People's Reporter: শুক্রবার রাত ৯ টা নাগাদ দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ঘটনাটি ঘটেছে। প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে দুই নেতার বাকযুদ্ধ চলে বলে অভিযোগ।
দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে বিবাদে বাবুল-অভিজিৎ
দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে বিবাদে বাবুল-অভিজিৎনিজস্ব চিত্র
Published on

দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর প্রকাশ্যেই বিবাদে জড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গাঙ্গুলি। বাবুল সুপ্রিয়র অভিযোগ, সংকীর্ণ রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে হুটার বাজিয়ে যাচ্ছিল বিজেপি সাংসদের গাড়ি। অন্যদিকে, তমলুকের সাংসদ পাল্টা বাবুলের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় গালিগালাজ, তাঁর উপর হামলার অভিযোগ তোলেন। দুই রাজনীতিকের মধ্যে প্রকাশ্য বিবাদে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে দুই নেতার বাগযুদ্ধ চলে বলে জানা গেছে।

শুক্রবার রাত ৯ টা নাগাদ দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ঘটনাটি ঘটেছে। সেই সময় কলকাতা থেকে হাওড়ার দিকে যাচ্ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা সাংসদ অভিজিৎ গাঙ্গুলি। অন্যদিকে, বাবুল সুপ্রিয়ও যাচ্ছিলেন হাওড়ার দিকে। বাবুলের দাবি, তিনি নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সেই সময় পিছন থেকে হুটার বাজিয়ে একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে আসছিল। বাবুলকে অতিক্রম করার চেষ্টা করলে তিনি অপর গাড়ির চালককে ঠিক ভাবে গাড়ি চালানোর কথা বলেন।

সংবাদ মাধ্যমে রাজ্যের মন্ত্রীর দাবি, পিছনের গাড়িটি তাঁকে অতিক্রম করার সময় একটা বাইকে ধাক্কা লেগে যেত। বাবুলের দাবি, তিনি ওই গাড়ির চালককে বলেন, ‘এ ভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন কেন? আপনি তো লোককে মেরে দেবেন! আমার গাড়ির সঙ্গে ঠেকে গেলে তো দুর্ঘটনা ঘটে যাবে’। তৃণমূল বিধায়কের দাবি, সেই সময় ওই গাড়ির পিছনের সিটে বসা একজন বলেন ‘চালা দে, চালা দে’। অর্থাৎ গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন এবং তখনও পর্যন্ত তিনি জানতেন ওই সিটে কে বসে আছেন।

বাবুল আরও জানান, দ্বিতীয় গাড়িটি কিছু দূর এগিয়ে যাওয়ার পর সেটি থামান তিনি। সেই সময়ই গাড়ির পিছনে অভিজিৎ গাঙ্গুলিকে বসে থাকতে দেখেন তিনি। গাড়িতে ‘এমপি তমলুক’ লেখাও তখন দেখতে পান বলে দাবি করেন তিনি। বাবুলের দাবি, বিজেপি সাংসদকে দেখে তিনি গাড়ির পিছনে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। ড্রাইভারকে গাড়ি ঠিক ভাবে চালানোর কথা বলতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সাংসদ তা না করে উল্টে অশ্রাব্য ভাষায় তাঁকে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ বাবুলের।

বিধায়কের অভিযোগ, ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন অভিজিৎ গাঙ্গুলি। বাবুল জানান, তাঁর পরিবারকে আক্রমণ করায় অভিজিৎ গাঙ্গুলিকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলেন তিনি। কিন্তু উনি ক্ষমা চাননি। গাড়ি থেকেও নামেননি। বাবুল জানান, বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘যা বলেছি, বেশ করেছি’।

অন্যদিকে, বাবুলের বিরুদ্ধে পাল্টা মদ্যপ অবস্থায় হামলার অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গাঙ্গুলি। তমলুকের সাংসদের দাবি, গাড়ির সামনে ‘এমপি তমলুক’ লেখা দেখেই বাবুল নিজের গাড়িটি জোরে চালিয়ে তাঁর গাড়ির সামনে দাঁড় করান। এরপর সাংসদের গাড়ির সামনে গালিগালাজ শুরু করেন। তাঁর বক্তব্য, প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি ওই গাড়িতে বাবুল রয়েছেন। মন্ত্রী গাড়ি থেকে নামার পর তিনি বুঝতে পারেন। তর্কাতর্কির সময় গাড়ির জানালা দিয়ে বাবুল হাত প্রবেশ করান বলেও অভিযোগ সাংসদের। অভিজিতের দাবি, এর ফলে তাঁর মোবাইল হাত থেকে পড়ে যায় এবং সেটির কিছুটা ক্ষতিও হয়।

তমলুকের সাংসদ জানান, তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা বাবুলকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি নিরাপত্তার কারণে গাড়ি থেমে নামেননি। তিনি বলেন, ‘মত্ত অবস্থায় বাবুল সুপ্রিয় বেশ কিছুক্ষণ লাফালাফি করেন। চিৎকার, চেঁচামেচি করেন। তার ভিডিয়োও রয়েছে আমার কাছে’। অভিজিতের অভিযোগ, তিনি মানুষের ‘চাকরী খেয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেন বাবুল। পাল্টা সাংসদ জানান, ‘তাতে আপনার গায়ে জ্বালা করছে কেন? আপনারা তো চাকরি বিক্রি করেছিলেন’। এমনকি এই ঘটনায় আইনের দ্বারস্থ হবে বলেও জানিয়েছেন তমলুকের সাংসদ। দুই নেতার বচসায় আশপাশে স্থানীয় মানুষজনের বেশ ভিড় জমে যায়। তাঁদের সামনেই প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে বাগযুদ্ধ চালিয়ে যান রাজ্যের শীর্ষ স্থানীয় দুই নেতা।

দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে বিবাদে বাবুল-অভিজিৎ
Calcutta High Court: শহরের আটটি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে বিবাদে বাবুল-অভিজিৎ
শিল্পীদের বয়কট ইস্যুতে অভিষেকের দাবি উড়িয়ে নিজের অবস্থানেই অনড় কুণাল, তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in