সম্প্রীতির কথা বলায় সমাজ মাধ্যমে হেনস্থার শিকার হিমাংশী নারওয়াল! সমালোচকদের কড়া বার্তা মহিলা কমিশনের

People's Reporter: হিমাংশী বলেছিলেন, “দয়া করে এই হামলার জন্য মুসলিম সম্প্রদায় বা কাশ্মীরি জনগণকে দায়ী করবেন না। সাধারণ কাশ্মীরিরা আমাদের অনেক সহায়তা করেছেন, পাশে থেকেছেন”।
হিমাংশী নারওয়াল
হিমাংশী নারওয়ালছবি - সংগৃহীত
Published on

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন নৌসেনা লেফটেন্যান্ট বিনয় নায়ওয়াল। এরপর তাঁর স্ত্রী হিমাংশী নারওয়াল ঘৃণা ও বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বার্তা দিয়েছিলেন।হিমাংশীর এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। কুৎসিত আক্রমণের পাশাপাশি তাঁর চরিত্রহননও করা হয়। এই আবহে হিমাংশীর পাশে দাঁড়িয়ে সমালোচকদের কড়া বার্তা দিল জাতীয় মহিলা কমিশন (NCW)।

পহেলগাঁও কাণ্ডের দিন থেকেই সবচেয়ে বেশি ভাইরাল হয়েছিল বৈসরনে স্বামীর পাশে বসে থাকা হিমাংশী নারওয়ালের ছবি। মাত্র ছ’দিন আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। মধুচন্দ্রিমায় কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেই নৃশংস অভিজ্ঞতার পরেও সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। হিমাংশী বলেছিলেন, “আমার স্বামী হামলার শিকার হয়েছেন, এটা আমার পরিবার ও গোটা দেশবাসীর জন্যই দুঃখজনক। তবে, দয়া করে এই হামলার জন্য পুরো মুসলিম সম্প্রদায় বা কাশ্মীরি জনগণকে দায়ী করবেন না। সাধারণ কাশ্মীরিরা আমাদের অনেক সহায়তা করেছেন, পাশে থেকেছেন। আমরা শান্তি ও ন্যায়বিচার চাই। যারা আমার স্বামীর সাথে অন্যায় করেছে তাদের শাস্তি চাই।"

তিনি আরও বলেছিলেন, “কিছু উগ্রপন্থী সব সময় সমাজে বিভেদ ছড়াতে চায়। কিন্তু সাধারণ কাশ্মীরিরা আমাদের অনেক সহায়তা করেছেন। আমার স্বামীর চিকিৎসার সময়ে সাধারণ কাশ্মীরিরা রক্তদান করেছেন। তাঁরাই আসল কাশ্মীর”।

হিমাংশীর এই মন্তব্য সামনে আসার পর থেকে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। সমাজমাধ্যমে হিমাংশীর বিরুদ্ধে একাধিক ঘৃণ্য মন্তব্য করতে শুরু করেন অনেকে। এক ব্যবহারকারী বলে, "তিনি এই ঘটনাটিকে সামাজিক ও রাজনৈতিক সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছেন।" আর একজন বলেন, হিমাংশীকেই গুলি করে মারা উচিত ছিল। এমনকি অনেকে কলেজ লাইফে হিমাংশী কেমন ছিলেন, তাঁর বন্ধুবৃত্তে কারা ছিলেন সেই নিয়েও সমাজ মাধ্যমে চর্চা শুরু করেন।

এই পরিস্থিতিতে জাতীয় মহিলা কমিশন হিমাংশীর পাশে দাঁড়িয়েছে। নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে তারা জানিয়েছে, “লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালের মৃত্যুর পর, তাঁর স্ত্রী হিমাংশী নারওয়ালের একটি বক্তব্যের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে তিনি সমালোচিত হচ্ছেন তা দুর্ভাগ্যজনক। ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের জন্য একজন মহিলাকে এভাবে আক্রমণ করা অত্যন্ত নিন্দনীয়”। আরও জানানো হয়েছে, “দেশ পাহেলগাঁও-এর ঘটনার জন্য ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ, কিন্তু মতবিরোধ প্রকাশের ভাষা সংবিধানের সীমার মধ্যেই থাকা উচিত”।

তবে বহু মানুষ হিমাংশীর এই বার্তাকে সমর্থন জানিয়েছে। প্রয়াত নৌসেনার স্ত্রীকে সমর্থন জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তিনি জানিয়েছেন, “তারা (সন্ত্রাসীরা) আমাদের মেয়ের (হিমাংশির) জীবন ধ্বংস করেছে। এই পরিস্থিতিতেও তিনি জানিয়েছেন, তিনি চান না যে আমাদের দেশে মুসলিম বা কাশ্মীরিদের প্রতি ঘৃণা তৈরি হোক। আমি আশা করি সরকার তাঁর কথা মনে রাখবে। যারা ঘৃণা ছড়ায় তারাই সন্ত্রাসীদের সন্তুষ্টি দেয়”।

হিমাংশী নারওয়াল
Chhattisgarh: জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রাণ রক্ষা ১১ জনের, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর মুখে নাজাকতের প্রশংসা

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in