DA Case: কেন নির্দেশমতো বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দেওয়া হল না? রাজ্যকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

People's Reporter:রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়, আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হোক। এমনকি অন্যান্য পক্ষও এই মামলার শুনানির জন্য সময় চায়। তখনই আদালত সন্দেহ প্রকাশ করে।
সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্টফাইল ছবি, সংগৃহীত
Published on

রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) ২৫ শতাংশ মেটানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আরও ছ'মাস সময় চেয়েছিল রাজ্য সরকার। এমনকি শীর্ষ আদালতের অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য। সেই মামলার শুনানিতে নির্দিষ্ট সময়ে বকেয়া কেন দেওয়া হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত। এমনকি মামলার শুনানির জন্য সব পক্ষের সময় চাওয়া নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চে উঠেছিল এই মামলা। বিচারপতির বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, কেন নির্দেশমতো বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ সরকারি কর্মচারীদের দেওয়া হল না? যদিও এর উত্তরে রাজ্য জানায়, আদালতের রায় তারা কার্যকর করতে চায়। কিন্তু তার জন্য সময় লাগবে। রাজ্যের আইনজীবীর ব্যাখ্যা, বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মেটাতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। সেই অর্থ জোগাড় করতে সময় লাগবে।

এরপরেই রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়, আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হোক। এমনকি অন্যান্য পক্ষও এই মামলার শুনানির জন্য সময় চায়। সরকারি কর্মচারীদের একাংশের আইনজীবী করুণা নন্দী বুধবার শুনানির পক্ষে সওয়াল করেন। তখনই আদালত সন্দেহ প্রকাশ করে। কেন সব পক্ষ ডিএ মামলার শুনানির জন্য প্রস্তুত নয়? প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি কারোল। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আজ সন্দেহজনক দিন। এখনই আমরা পুরো মামলার শুনানি করব"। যদিও এতে আপত্তি জানায় সব পক্ষ।

এরপরে বিচারপতি জানতে চান, শুনানির জন্য কোন পক্ষের কত সময় লাগবে? প্রয়োজনে সোমবার বেলা ১২টা থেকে এই মামলার শুনানি শুরুর ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু পরে জানিয়ে দেন, কাউকে সময় দেওয়া যাবে না। মঙ্গলবারই শুনানির দিন স্থির করেন তিনি। সব পক্ষকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।

২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ডিএ বকেয়া রয়েছে। সেই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। গত ১৬ মে শুনানিতে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ ছিল, ১০ বছরে যে ডিএ বাকি আছে তার ২৫ শতাংশ পরের ছ'সপ্তাহের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্যকে। ২৭ জুন পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু ডিএ দেওয়ার বদলে ২৭ জুন সুপ্রিম কোর্টে ছ'মাসের সময় চেয়ে নেয় রাজ্য। পাশাপাশি আদালতের অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানায়।

রাজ্যের যুক্তি ছিল, রাজ্যের লক্ষ লক্ষ কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দিতে গেলে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। বর্তমানে রাজ্যের কাছে এত পরিমাণ অর্থ নেই। ডিএ দিতে গেলে ঋণ নিতে হবে সরকারকে, যার জন্য কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হবে। যা সময়সাপেক্ষ। এছাড়া, আরও জানিয়েছিল, ডিএ বাধ্যতামূলক নয়, এটা ঐচ্ছিক বিষয়। তাই কেন্দ্রের হারে ডিএ দিতে বাধ্য নয় রাজ্য সরকার।

রাজ্য আরও জানিয়েছিল, রাজ্যের পক্ষ থেকে আরওপিএ ২০০৯ চালু করা হয়েছে। যার নিয়মানুযায়ী, রাজ্য নিজস্ব হারে ডিএ দেবে কর্মচারীদের। কেন্দ্রের নিয়মানুযায়ী নয়। এছাড়া, কেন্দ্রের মতো রাজ্যের আর্থিক পরিকাঠামো নেই। তাছাড়া, কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে (১০০ দিনের কাজ, জাতীয় স্বাস্থ্য অভিযান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা) অনুদান কমিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে চাপ পড়ছে রাজ্যের উপর। এছাড়া জিএসটি সংক্রান্ত বকেয়াও কেন্দ্র এখনও দেয়নি, যার পরিমাণ প্রায় ১.৮৭ লক্ষ কোটি টাকা।

সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সরকারি কর্মচারীদের মোট বকেয়া ডিএ–র পরিমাণ ১১ হাজার ৮৯০ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া পেনশন প্রাপকদের জন্য মোট বকেয়া ১১ হাজার ৬১১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। তাছাড়াও শিক্ষক, পুরসভা, পঞ্চায়েত–সহ স্বশাসিত সংস্থা ও রাজ্য সরকার পরিচালিত সংস্থার কর্মীদের পাওনা ১৮ হাজার ৩৬৯ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। এই সমস্ত কিছু মিলিয়ে ডিএ-র অঙ্কটা ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই পরিস্থিতিতে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দিতে গেলে প্রয়োজন প্রায় ১০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। যার ফলে বেহাল হবে রাজ্যের আর্থিক অবস্থা। বর্তমানে রাজ্যের সরকারি কর্মীরা ডিএ পান ১৮ শতাংশ। ২০২৫-২৬-এর বাজেটে ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ১৪ থেকে ১৮ করেছে রাজ্য সরকার।

সুপ্রিম কোর্ট
চিঠিতে বাংলাকে 'বাংলাদেশী ভাষা' উল্লেখ! 'নিরক্ষর' দিল্লি পুলিশকে সংবিধান পাঠের পরামর্শ CPIM-তৃণমূলের

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in