
কুমারীত্ব পরীক্ষা অসাংবিধানিক। এতে নারীর অধিকার এবং মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়। যা সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে। বিবাহবিচ্ছেদের এক মামলার প্রেক্ষিতে এমনই পর্যবেক্ষণ ছত্তিশগড় হাইকোর্টের।
আদালত সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল রাজগড়ের বাসিন্দা যুগলের বিয়ে হয়। হিন্দু রীতি মেনে বিয়ে হয়েছিলে তাঁদের। ছত্তিশগড়ের কোরবা জেলার উর্গা তহসিলে একসাথে বসবাস শুরু করেন ওই যুগল। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই শুরু হয় অশান্তি। জুলাই মাস থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন ওই যুগল।
এরপর রায়গড়ের পারিবারিক আদালতে মাসে ২০ হাজার টাকা খোরপোশের আবেদন জানিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন স্ত্রী। একই সঙ্গে ওই তরুণী স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, পুরুষত্বহীন তাঁর স্বামী সঙ্গমে অক্ষম। স্বামী ও তাঁর পরিবার তাঁকে ঠকিয়েছে বলে দাবি করেন ওই তরুণী।
এর পাল্টা স্বামী দাবি করেন, তাঁর স্ত্রীর চরিত্র ভাল নয়। স্ত্রীর কুমারীত্ব পরীক্ষা করে দেখার দাবি জানান তিনি। যদিও সেই আবেদন খারিজ করে দেয় পারিবারিক আদালত। এরপর সেই আবেদনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ছত্তিশগড় হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন ওই যুবক।
বিচারপতি অরবিন্দ কুমার ভার্মার সিঙ্গেল বেঞ্চ উভয় পক্ষের দাবি শোনার পরে এবং আইনি নজির পর্যালোচনা করে পারিবারিক আদালতের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন।
পর্যবেক্ষণে তিনি স্পষ্ট জানান, কুমারীত্ব পরীক্ষার দাবি অসাংবিধানিক। তিনি ঝাড়খণ্ড রাজ্য বনাম শৈলেন্দ্র কুমার রাই (২০২২) ১৪ SCC ২৯৯ - এর রায় উদ্ধৃত করেন। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে বলেছে যৌন নির্যাতনের অভিযোগকারী ব্যক্তির উপর "টু-ফিঙ্গার টেস্ট" বা প্রতি ভ্যাজাইনাম পরীক্ষা পরিচালনা করা অসদাচরণ।
সেফি বনাম সিবিআই এবং অন্যান্য মামলায় দিল্লি হাইকোর্টও রায় দিয়েছে, একজন মহিলা বন্দী বা অভিযুক্তের উপর কুমারীত্ব পরীক্ষা করা অসাংবিধানিক। এতে সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হয়, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের নিশ্চিত মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের উল্লেখ রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন