
* গত ১১ বছরে ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনরিটির কাছে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনার অভিযোগ জমা পড়েছে ৫৬৮টি।
* তালিকার শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ। মোট নথিভুক্ত অভিযোগ ২৫১।
* সিপিআইএম সাংসদ জন ব্রিটাস ও ডিএমকে সাংসদ পি উইলসনের প্রশ্নের উত্তরে একথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক।
২০১৪-১৫ থেকে ২০২৪-৩৫ পর্যন্ত দেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনায় ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনরিটির (NCM) কাছে নথিভুক্ত অভিযোগের সংখ্যা ৫৬৮। যে তালিকা অনুসারে ঘটনার শীর্ষে আছে উত্তরপ্রদেশ। সেখানে এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে ২৫১টি। সিপিআইএম সাংসদ জন ব্রিটাস (Starred Question 255, answered on 24.3.25) এবং ডিএমকে সাংসদ পি উইলসনের (Unstarred Question 1245, answered on 10.3.25) করা প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যসভায় একথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক দপ্তরের (Ministry of Minority Affairs) মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু।
সাংসদদের প্রশ্নের উত্তরে কিরেণ রিজিজু জানান, কেন্দ্রীয় সরকার কেন্দ্রীয়ভাবে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনার তথ্য সংরক্ষণ করে না। তবে কমিশনের কাছে এই ধরণের অভিযোগ জমা পড়লে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের কাছে সেই অভিযোগ পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিরেণ রিজিজু আরও জানিয়েছেন, গত ১১ বছরে কমিশনের কাছে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার মোট ৫৬৮টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। যার মধ্যে শীর্ষে আছে উত্তরপ্রদেশ (২৫১)। এরপরেই তালিকায় আছে দিল্লি। সেখানে এই ধরণের ৮০টি ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানায় ৩৩টি করে এবং কেরালায় ২০টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
রাজ্যসভায় সিপিআইএম এবং ডিএমকে সাংসদদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, ২০১৪-১৫ থেকে ২০২৪-২৫-এর মধ্যে কর্ণাটক থেকে ১০ টি অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। যদিও ২০২৩-২৪ ও ২৪-৩৫-এ এই রাজ্যে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।
২০১৪-১৫ থেকে ২০২৪-২৫-এর মধ্যে সবথেকে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে ২০১৮-১৯-এ। যে বছরে মোট নথিভুক্ত অভিযোগের সংখ্যা ছিল ১০৯। ২০২৪-২৫-এ এখনও পর্যন্ত এই ধরণের নথিভুক্ত অভিযোগের সংখ্যা ২৯। ২০১৪-১৫ সালে যা ছিল ৩৪ এবং ২০২৩-২৪-এ ছিল ৩০।
মন্ত্রীর দেওয়া জবাব অনুসারে, উত্তরপ্রদেশ এই ধরণের ঘটনার নিরিখে শীর্ষে থাকলেও বিগত কয়েক বছরে তা কমেছে। ২০১৭-১৮ সালে উত্তরপ্রদেশে এই ধরণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল ৫১টি। যা ২০২০-২১-এ নেমে আসে ১৬ তে এবং তারপরের বছরগুলিতে যথাক্রমে ১৩, ৯, ৪ এবং ৩টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে সিপিআইএম সাংসদ জন ব্রিটাস বলেন, মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঘটনায় একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেস তারা রাখে না। এক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয় বলে দাবি করে কেন্দ্র কার্যকরভাবে তার দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই এড়িয়ে চলার মনোভাব কেন্দ্রীয় সরকারের তফসিলি জাতি এবং তফসিলি জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য একই রকম ডাটাবেস বজায় রাখার প্রচলিত পদ্ধতির সম্পূর্ণ বিপরীত।
তিনি বলেন, তফসিলি জাতি/তফসিলি উপজাতিগোষ্ঠীর মতো সংখ্যালঘুদের জন্যও কেন্দ্রের একই পদ্ধতি গ্রহণ করা উচিত। যাতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অপরাধগুলি পদ্ধতিগতভাবে নথিভুক্ত করা হয় এবং সমাধান করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন