
প্রথম দফায় ১০৪ জন 'অবৈধ' ভারতীয় অভিবাসীকে নিয়ে পাঞ্জাবের অমৃতসরে নামল মার্কিন সামরিক বিমান C-17। মঙ্গলবার টেক্সাস থেকে রওনা দিয়েছিল বিমানটি।
বুধবার দুপুর ২টো নাগাদ বিমানটি অমৃতসরের শ্রীগুরু রামদাসজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে। ভারতীয় অভিবাসীদের গ্রহণ করেন পাঞ্জাব পুলিশ ও ভারত সরকারের আধিকারিকরা। প্রথম ধাপে ১০৪ জনকে ফেরানো হয়েছে। এরপর আরও ভারতীয় 'অবৈধ' অভিবাসীকে ফেরানো হবে।
জানা গেছে, বুধবার যাঁরা এসেছেন তাঁদের মধ্যে ২৫ জন মহিলা এবং ১২ জন নাবালক রয়েছে। এই ১০৪ জনের মধ্যে গুজরাত, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার ৩০ জন করে রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা রয়েছেন। এঁদের মধ্যে ৪৮ জনের বয়স ২৫ বছরের কম।
বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এই অভিবাসীদের নাকি হাতে হাতকড়া এবং পা-য়ে শিকল দিয়ে বাঁধা ছিল। এমন ভাবেই তাঁদের আমেরিকা থেকে অমৃতসর নিয়ে আসা হয়েছে। বিমান থেকে নামার পর হাতকড়া-শিকল খোলা হয়। এর পর বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনে ভারতীয় আধিকারিকরা তাঁদের দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
অভিযোগ, এই অবৈধ অভিবাসীরা মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন এবং পরে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে মার্কিন অভিবাসন আদালত তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেয়। অনেকে আবার নকল নথি বা ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বেআইনি ভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন। যা মার্কিন আইনে স্বীকৃত নয়।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, সমস্ত অভিবাসীদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালও এক সাংবাদিক সম্মেলনে আগেই বলেছিলেন, শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, বিশ্বের যে কোনো স্থানে যদি ভারতীয়রা অবৈধভাবে বসবাস করেন তাহলে তাঁদের আমরা ফিরিয়ে নেব।
ভারত সরকার বর্তমানে এই অভিবাসীদের পুনর্বাসনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে যারা যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন, তাদের কর্মসংস্থান ও সামাজিক পুনর্বাসনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরই সে দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হন। ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশের বাসিন্দাদেরও ফেরত পাঠানো শুরু হয়েছে। শুধু ট্রাম্প প্রশাসন নয়, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনও অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিল। বিশেষ করে দক্ষিণ আমেরিকা ও এশিয়ার দেশগুলো থেকে অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন