

বিবিসি-র ইন্টারভিউতে হরিদ্বারের ধর্ম সংসদ নিয়ে প্রশ্ন করতেই প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়ে রিপোর্টারের মাস্ক ছিনিয়ে নিলেন উত্তরপ্রদেশের ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য্য। এরপর ইন্টারভিউ বন্ধ করে দিয়ে ক্রুদের ওই ফুটেজ মুছে ফেলতে বাধ্য করেন তিনি। বিবিসির তরফ থেকে মঙ্গলবার একথা জানানো হয়েছে।
বিবিসির ইন্টারভিউতে দেখা গেছে, সাক্ষাৎকারকারী হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে হিন্দুত্ববাদী নেতাদের ঘৃণাত্মক বক্তৃতা নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন মিঃ মৌর্য্যকে। জনগণকে আশ্বস্ত করতে এই মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে নেতাদের কথা বলা উচিত কিনা তা জানতে চেয়েছিলেন সাক্ষাৎকারকারী।
এই প্রশ্নের উত্তরে মৌর্য্য বলেন, "আমাদের নিজেদের প্রমাণ করার দরকার নেই। আমরা 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ'-এ বিশ্বাস করি। ধর্মীয় নেতাদেরও নিজেদের মত প্রকাশের অধিকার আছে।"
কেন সবসময় হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের কাঠগড়ায় তোলা হয় তা নিয়ে পাল্টা সঞ্চালককে প্রশ্ন করেন উত্তরপ্রদেশের এই বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, 'কেন শুধু হিন্দু নেতাদের কথা জিজ্ঞেস করছেন? অন্যান্য ধর্মীয় নেতারা কি ধরণের মন্তব্য করেন? ৩৭০ ধারা বাতিলের আগে কতজনকে জম্মু-কাশ্মীর ছাড়তে হয়েছিল, আপনি কেন তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করছেন না? কেবল একটি ধর্মকে লক্ষ্য করে প্রশ্ন করা উচিত নয় আপনার। ধর্ম সংসদ বিজেপির অনুষ্ঠান ছিল না, ধর্মীয় নেতাদের অনুষ্ঠান। সাধুরা যা বিশ্বাস করেন তা তাঁরা অবশ্যই প্রকাশ্যে বলতে পারেন। এর সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। মুসলিম এবং খ্রিস্টান নেতারাও এই ধরণের কথা বলেন। তাঁদের নিয়েও কথা বলুন।'
এরপর সাক্ষাৎকারকারী তাঁকে ধর্ম সংসদ থেকে মুসলিম গণহত্যার ডাক দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন করতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তিনি। তিনি বলেন, "আপনি কোন ভিডিওর কথা বলছেন আমি জানি না। আপনি নির্বাচন সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করেছেন? আপনি সাংবাদিকের মতো কথা বলছেন না, একটি নির্দিষ্ট দলের এজেন্টের মতো কথা বলছেন। আমি আপনার সাথে কথা বলবো না।"
এরপরই আচমকা ভিডিওটি শেষ হয়ে যায়। বিবিসির বক্তব্য অনুসারে, উপমুখ্যমন্ত্রী তাঁর মাইক বন্ধ করে দিয়ে ভিডিওটি শেষ করে দেন এবং রিপোর্টারের মূখ থেকে মাস্ক ছিনিয়ে নিতে উদ্যত হন। উপস্থিত থাকা অন্যান্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এরপর ক্রুদের এই অংশের ভিডিও মুছে ফেলতে বাধ্য করেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, পরে এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন