
সোমবার থেকে দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে উত্তরাখণ্ডে চালু হল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (UCC)। আজই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি ইউসিসি পোর্টালের উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য সফরের ঠিক আগে দুপুর ১২:৩০ মিনিটে এই যুগান্তকারী আইনটি কার্যকর করা হয়েছে।
রবিবার সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী ধামি জানান, '২০২২ সালে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এই আইন বলবৎ হওয়ার পর উত্তরাখণ্ডের সকল মানুষ সমানাধিকার পাবেন। আমরা প্রতিশ্রুতি দিলে সেটা পালন করতে জানি।'
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হওয়ায় এবার থেকে ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই বিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, জমি-সম্পপ্তি ও উত্তরাধিকার সম্পর্কিত সমস্ত বিষয়ে সমানাধিকার পাবে। আইন অনুযায়ী সব ধর্মেই পুরুষদের বিবাহের বয়স ন্যূনতম ২১ এবং মহিলাদের ১৮ করা হয়েছে। সব ধর্মেই বিবাহের ক্ষেত্রে ৬০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলক। বহুবিবাহ এবং ‘হালালা’ নিষিদ্ধ।
আইনে বলা হয়েছে 'লিভ ইন' সম্পর্কে থাকতে হলে পুরুষ ও মহিলাকে নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। ২১ বছর বয়সের কম হলে ওই নারী ও পুরুষের মায়ের সম্মতি প্রয়োজন। অনুমতি না নিলে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে। আর নাম নথিভুক্ত করাতে যদি এক মাস দেরি হয় তাহলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা সহ ৩ মাসের জেল পর্যন্ত হতে পারে।
আইনে বলা হয়েছে দত্তক নেওয়া, সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নেওয়া অথবা সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তির মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সমস্ত শিশুই বায়লজিক্যাল শিশু হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তিতে তাঁর স্ত্রী, পুত্র ও কন্যার সমান অধিকার থাকবে।
উল্লেখ্য, সকলের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলেও আদিবাসীদের জন্য এইন নিয়ম চালু হবে না। বিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ সংক্রান্ত বিষয়ে আদিবাসীদের নিজস্ব নিয়মই কার্যকর থাকবে।
২০২২ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। তা ২ বছর পর বাস্তবায়ন হচ্ছে। ২০২২ সালেই সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির খসড়া তৈরির জন্য একটি প্যানেল গঠিত হয়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য বিধানসভায় বিলটি পাস হয়। মার্চ মাসে রাষ্ট্রপতির সম্মতি মেলে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন