

বিহার, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, হিমাচল প্রদেশ এবং ছত্তিশগড় সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পথে নেমেছেন ট্রাক পরিবহনকর্মীরা। না, পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ নয়, এই বিক্ষোভ কেন্দ্র সরকারের এক বিলের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ট্রাক পরিবহন কর্মীদের এই বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস। যদি এই প্রতিবাদ দীর্ঘদিন চলতে থাকে তাহলে জরুরি পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হবে মনে করা হচ্ছে।
কেন প্রতিবাদ করছেন ট্রাক পরিবহনকর্মীরা?
সম্প্রতি প্রায় বিরোধীশূন্য সংসদে ঔপনিবেশিক যুগের ইন্ডিয়ান পেনাল কোড পরিবর্তন করে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল পাস করেছে কেন্দ্র। সেই বিলে ‘হিট অ্যান্ড রান’ ঘটনায় মৃত্যু হলে অভিযুক্ত চালকের ১০ বছর পর্যন্ত জেল এবং ৭ লাখ টাকা জরিমানা হওয়ার উল্লেখ রয়েছে। পুরোনো আইনে এই মামলায় চালকের মাত্র ২ বছরের জেল হওয়ার উল্লেখ ছিল। নতুন এই আইন মানতে রাজি নন ট্রাক চালক থেকে মালিকরা। তাঁরা এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশজুড়ে ‘চাক্কা জ্যাম’ শুরু করেছেন নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে।
ক্যাব চালক, অটো চালক, বাস, ট্যাংকার পরিবহনকর্মীরা এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক যানবাহন কর্মীরাও এই আন্দোলনে শামিল হয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, তাঁরা এই বিপুল জরিমানা দেবেন কিভাবে?
হরিয়ানার এক ট্রাক চালক বলেন, “কোনও চালকই ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনা ঘটায় না। আমরা পালাই ক্ষিপ্ত জনতার হাত থেকে বাঁচতে। শুধুমাত্র এই কারণে আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সাহসও হয় না আমাদের।“
আর এক ট্রাক চালক জানান, “এই নয়া আইন চালকদের গাড়ি চালাতে নিরুৎসাহ করবে। তাঁরা বিকল্প পেশায় চলে যেতে পারেন। এর প্রভাব সরাসরি পরিবহন ব্যবসায় পড়বে।“
অল পাঞ্জাব ট্রাক অপারেটরস ইউনিয়নের সভাপতি হ্যাপি সিধু নতুন আইনটিকে "কালা আইন" বলে উল্লেখ করেছেন।
দেশজুড়ে বিক্ষোভের প্রভাব
হাজার হাজার ট্রাক কর্মীদের ধর্মঘটের ফলে ফল, সবজির মতো জরুরী পণ্য পরিষেবায় এর প্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যেই জ্বালানী সংকট তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি শহরে। শীঘ্রই আন্দোলন না তুললে আগামী দিনে বাকি শহরেও এই পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঔরঙ্গাবাদের পেট্রোল পাম্প ডিলারদের একটি সমিতি জানিয়েছে, মঙ্গলবারের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে সমস্ত জ্বালানি।
হিমাচলে পর্যটন ব্যবসাতেও প্রভাব ফেলেছে এই ধর্মঘট। ক্যাব অপারেটররা ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় পর্যটকরা গাড়ি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন