এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ। জমি বিবাদের জেরে ৩৮ বছরের এক আদিবাসী মহিলাকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দিল একদল পুরুষ।
রামপ্যারি সাহারিয়া নামের ওই আদিবাসী মহিলা গুনা জেলার বাসিন্দা। তিনি গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। মধ্যপ্রদেশে সরকারী কল্যাণ প্রকল্পে ওই মহিলার পরিবার জমি পেয়েছিলেন। সেই জমি দখল করে স্থানীয় একদল দুষ্কৃতী। তারপরেই ঘটে এই নারকীয় ঘটনা।
গুনা জেলার পুলিস প্রধান পঙ্কজ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, শনিবার মহিলার স্বামী অর্জুন সাহারিয়া জমিতে গিয়ে দেখেন তাঁর স্ত্রী জ্বলন্ত অবস্থায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন৷ মহিলার স্বামী যখন খামারে যাচ্ছিলেন, তখন প্রতাপ, হনুমত এবং শ্যাম কিরার (মূল অভিযুক্তরা) এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের একটি ট্রাক্টরে করে ছেড়ে দিয়ে যেতে দেখেছেন তিনি। কিছুক্ষণ পর সেই দিক থেকে ধোঁয়া আসতে দেখে মাঠের দিকে ছুটে যান তিনি। সেখানে পৌঁছে তিনি দগ্ধ অবস্থায় তাঁর স্ত্রীকে পড়ে থাকতে দেখেন।
অর্জুন সাহারিয়া আরও জানান, গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পরে তিন অভিযুক্ত মিলে একটি ভিডিও তোলে। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ারও করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও অভিযুক্ত তিনজন ওই মহিলাকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন। পুলিসের কাছে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। মহিলার স্বামীর দাবি, পুলিশ এই ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই তিনজন ব্যক্তিই অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী অর্থাৎ ওবিসি সম্প্রদায়ের। অনেক বছর আগে একটি সরকারি কল্যাণ প্রকল্পের অধীনে ৬ বিঘা জমি জমি আক্রান্ত সাহারিয়া পরিবারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। এই জমিকে কেন্দ্র করেই বিবাদ।
পুলিশ অফিসার পঙ্কজ শ্রীবাস্তব বলেন, "অর্জুন সাহারিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং এফআইআর-এ দেওয়া নাম অনুযায়ী তিনজনের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।"
এই ঘটনায় মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। নিজের ট্যুইটারে রমেশ বলেছেন, "যে দল দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য দাঁড় করিয়েছে তারা একজন আদিবাসী মহিলার উপর এমন ভয়ানক নৃশংসতার অনুমতি দেয় কিভাবে? অত্যন্ত লজ্জাজনক!"
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।