আগুন জ্বালিয়ে সিগারেট ধরিয়ে সুখটান আর নয়। এবার হয়তো সরাসরি আগুন লাগতে চলেছে সিগারেটের দামে। সেন্ট্রাল এক্সাইজ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৫-এ [Central Excise (Amendment) Bill, 2025] সেরকমই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি এই বিলে পেশ করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী। যে বিলে তামাকজাত পণ্যের ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণে এক্সাইজ ডিউটির কথা বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মন্ত্রীসভার অনুমোদন পেয়েছে এই বিল।
সেন্ট্রাল এক্সাইজ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৫ অনুসারে তামাকজাত পণ্যের ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রতি ১০০০ স্টিকে কর ছিল ২০০ থেকে ৭৩৫ টাকা থেকে বেড়ে হতে চলেছে ২,৭০০ থেকে ১১,০০০ টাকা। সিগারেটের দৈর্ঘ্য এবং প্রকৃতি অনুসারে এই কর নির্ধারিত হবে।
জানা গেছে, চিবিয়ে খাবার তামাকের ক্ষেত্রে (Chewing Tobacco) কর ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হতে চলেছে ১০০ শতাংশ। হুক্কার তামাকের (Hookah Tobacco) ক্ষেত্রে তা ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হবে ৪০ শতাংশ এবং তামাকের মিশ্রণের (Smoking Mixtures) ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে হতে চলেছে ৩০০ শতাংশ। আধিকারিকদের মতে এর ফলে যে সিগারেটের দাম এখন ১৮ টাকা তা বেড়ে হতে পারে ৭২ টাকা।
ইতিমধ্যেই এই বিল সংসদে পাশ হলেও রাজ্যসভা থেকে তা ফেরত পাঠানো হয়েছে লোকসভায়। কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী নতুন এই বিলে সিগারেট, সিগার, হুক্কা তামাক, চেবানোর তামাক, জর্দা এবং সুগন্ধি তামাকের ক্ষেত্রে কর ব্যবস্থায় সংশোধনী এনেছেন। গত ৪ ডিসেম্বর সংসদে এই বিল পাশ হয়।
এই বিলের উদ্দেশ্য হলো প্রক্রিয়াজাতবিহীন তামাক, প্রক্রিয়াজাত তামাক, তামাকজাত পণ্য এবং তামাকের বিকল্প দ্রব্যের উপর কেন্দ্রীয় আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করা। যদিও ১৯৪৪ সালের কেন্দ্রীয় আবগারি আইন অনুযায়ী প্রতি হাজার সিগারেটের উপর ২০০ টাকা থেকে ৭৩৫ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্ক ধার্য করা হয়, এই বিলের অধীনে বর্ধিত শুল্ক প্রতি হাজার সিগারেটের জন্য দুই হাজার ৭০০ টাকা থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত হবে।
বিলে প্রক্রিয়াজাত তামাকজাত পণ্যের জন্যও উচ্চতর আবগারি শুল্কের বিধান রাখা। এই বিলের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে, মানুষকে তামাকের কুফল থেকে রক্ষা করা এবং এর ব্যবহার থেকে বিরত রাখা।
বিল প্রসঙ্গে রাজ্যসভায় আলোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, সিগারেটের উপর বর্ধিত শুল্ক রাজ্যগুলির সাথে ভাগ করে নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এটি কোনো সেস নয়, বরং আবগারি শুল্ক। মন্ত্রীর আশ্বাস, এই বিলে তামাক চাষী এবং বিড়ি শ্রমিকদের কোনো ক্ষতি হবে না। তামাক চাষীদের দেখাশোনা করার জন্য এবং তাদের তামাক চাষ ছেড়ে অন্য ফসল চাষে উৎসাহিত করার জন্য ফসল বৈচিত্র্যকরণের মতো অনেক প্রকল্প রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২ সালের মধ্যে ১.১২ লক্ষ একরের বেশি জমি তামাক চাষ থেকে অন্য ফসলের চাষে স্থানান্তরিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশে ৪৯.৮২ লক্ষ নিবন্ধিত বিড়ি শ্রমিক রয়েছেন এবং শ্রম কল্যাণ সংস্থাগুলির মাধ্যমে সারা দেশে শ্রম কল্যাণ প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন