এবার তামিলনাড়ুতে (Tamil Nadu) রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে উঠলো। রাজ্যপাল আর এন রবিকে (Governor R N Ravi) 'শান্তির জন্য হুমকি' বলে অভিহিত করেছে শাসক দল ডিএমকে (DMK)। শুধু তাই নয়, 'গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে জনসেবার কাজে বাধা' দেওয়ার অভিযোগে রাজ্যপালের পদ থেকে তাঁর (রবিকে) অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু (President Droupadi Murmu)-র কাছে এক স্মারকলিপি জমা দিয়েছে ডিএমকে (DMK)। যেখানে বলা হয়েছে, 'সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকে উস্কে দিচ্ছেন রাজ্যপাল আর এন রবি। ভারতীয় সংবিধান ও আইনকে রক্ষা করার যে শপথ নিয়েছেন, তা লঙ্ঘন করেছেন তিনি।'
একইসঙ্গে, অভিযোগ আনা হয়েছে বিধানসভায় পাস হওয়া বিলে সই করতে অযথা বিলম্ব করেছেন রাজ্যপাল।
মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির কাছে যে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, 'অনেকেই তাঁর মন্তব্যগুলিকে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসাবে বিবেচনা করতে পারে। কারণ, তাঁর মন্তব্যগুলি সরকারের প্রতি অসন্তোষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে।'
শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল আর এন রবি সাংবিধানিক পদের জন্য অযোগ্য। তিনি বরখাস্ত হওয়ার যোগ্য বলে দাবি করা হয়েছে ডিএমকে-র তরফে। যদিও, এ বিষয়ে রাজ্যপাল রবির কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।
এর আগে, সংবিধান বিরোধী কাজের অভিযোগে সমস্ত সমমনস্ক সাংসদদের আর এন রবিকে বরখাস্ত করতে প্রস্তাব পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছিল ডিএমকে।
জানা যাচ্ছে, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আর এন রবির কাছে ২০ টি বিল আটকে রয়েছে। আইন অনুসারে, কোনো রাজ্যপাল কোনও বিলে সম্মতি না জানিয়ে, তা রাজ্যের মন্ত্রীসভার কাছে ফেরত পাঠাতে পারেন। কিন্তু, মন্ত্রিসভা বিলটি রাজ্যপালের কাছে পুনরায় পাঠালে, তা ফেরত পাঠাতে বা আটকে রাখতে পারবেন না রাজ্যপাল।
তবে শুধু তামিলনাড়ু নয়, কেরালা এবং তেলেঙ্গানাতেও রাজ্যপালকে নিয়ে সংঘাত চরমে উঠেছে। প্রতিদিনই কিছু না কিছু সমস্যা সামনে আসছে। রাজ্যপাল কেন্দ্রের হাতের পুতুল— এই অভিযোগে সরব হয়েছেন তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই।
এছাড়াও তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলিসাই সৌন্দররাজনের (Tamilisai Soundararajan) হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। ডিএমকে অভিযোগ করেছে, তেলঙ্গানার রাজ্যপাল অন্য রাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ‘নাক গলাচ্ছেন’।
প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর এক বিজেপি নেত্রী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন তামিলিসাই। দীর্ঘ দিনের এই বিজেপি নেত্রীকেই তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল করে পাঠিয়েছে মোদী সরকার। শুধু তামিলনাড়ুই নয়, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সরকারের সঙ্গেও তামিলিসাই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছেন।
ডিএমকে-র মুখপত্র মুরাসোলিতে কড়া ভাষায় তেলেঙ্গানার রাজ্যপালকে আক্রমণ করা হয়েছে। মুখপত্রে লেখা হয়েছে, ‘তেলঙ্গানার রাজ্যপালের তামিলনাড়ু নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। এটা তাঁর কাজ নয়। তিনি বরং রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তামিলনাড়ুতে ফিরে রাজনীতি করতে পারেন।'
দলীয় মুখপত্রে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আর এন রবিকেও নিশানা করা হয়েছে। মুখপত্রে লেখা হয়েছে, 'তিনি সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি যে সব মন্তব্য করে চলেছেন তাতে সর্বস্তরে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।'
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন