
ছ’বছর পর অবশেষে সাজা ঘোষণা হল তামিলনাড়ুর পোল্লাচি যৌন নির্যাতন মামলায় (Pollachi Sex Assault Case)। যৌন নির্যাতন এবং ব্ল্যাকমেইল মামলায় অভিযুক্ত ন’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেন নিম্ন আদালতের বিচারক নন্দিনী দেবী।
দোষীরা হলেন - সাবারিরাজন ওরফে ঋষবন্ত (৩২), তিরুনাভুকারাসু (৩৪), টি বসন্ত কুমার (৩০), এম সতীশ (৩৩), আর মণি ওরফে মণিভান্নান (পি বাবু) (৩৩), হারন পল (৩২), অরুলানন্থম (৩৯) এবং অরুণ কুমার (৩৩)। বর্তমানে তারা সালেম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি।
মঙ্গলবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দোষীদের নিয়ে আসা হয় কোয়েম্বাটুর আদালতে। বিচার চলাকালীন ২০০ টিরও বেশি নথি এবং ৪০০ টিরও বেশি বৈদ্যুতিন প্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়। এনিয়ে তামিলনাড়ু মহিলা সমষ্টির সদস্য বলেছেন, “এই রায় স্বস্তির। তবে নির্যাতিতাদের ক্ষতিপূরণ এবং সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা প্রয়োজন”।
২০১৯ সালে তামিলনাড়ুর পোল্লাচি শহরে যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল গোটা দেশে। অভিযোগ, একটি দল সোশ্যাল মিডিয়া মারফত মহিলাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে তাঁদের সাথে দেখা করার জন্য নির্জন স্থানে ডাকতেন। সেখানে তাঁদের যৌন নির্যাতন করা হত এবং সেগুলির ভিডিও করা হত। পরবর্তীতে সেই ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হত। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে।
২০১৯ সালে ঘটনাটি সামনে আসে এক কলেজ ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে। এই কলেজ ছাত্রী সহ মোট ৮ জন এই দলের শিকার হয়েছেন। সকলেই আদালতে বয়ান দিয়েছেন। সেগুলির ভিত্তিতে আদালত ন’জন অভিযুক্তকে ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ধারা ধর্ষণ, গণধর্ষণ, একই ভুক্তভোগীকে বারবার ধর্ষণ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, যৌন হয়রানি এবং ব্ল্যাকমেইল –এর আওতায় দোষী সাব্যস্ত করে।
মামলাটি প্রথমে তামিলনাড়ু পুলিশ তদন্ত করলেও, জনরোষ এবং রাজনৈতিক চাপের কারণে ১২ মার্চ, ২০১৯-এ এটি তামিলনাড়ু ক্রাইম ব্রাঞ্চের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আরও পরে সিবিআই তদন্তভার নেয়। সিবিআই ২০১৯ সালের মে মাসে পাঁচজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে এবং পরে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে। মামলার বিচার ২০২০ সালে মহিলা আদালতে স্থানান্তরিত হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন