
জমি দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেলেন জনতা দল (সেক্যুলার)-র নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মামলা বাতিলের আর্জি খারিজ করল শীর্ষ আদালত। নিম্ন আদালতেই এই মামলা চলবে বলে জানালো সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট কুমারস্বামীর বিরুদ্ধে থাকা দুর্নীতির মামলাটি বাতিলের আবেদন খারিজ করে দেয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের বেঞ্চ কুমারস্বামীর আবেদন খারিজ করে দেয়। শীর্ষ আদালত জানায়, প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা চলার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে। মামলাটির সঠিকভাবে শুনানি হওয়া প্রয়োজন। এইভাবে খারিজ করে দেওয়া সম্ভব নয়। নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
সূত্রের খবর, এই মামলা কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ের একটি বিতর্কিত জমি বরাদ্দের সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কুমারস্বামী তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেআইনিভাবে জমি বরাদ্দ করেছিলেন, যা সরকারি নীতির পরিপন্থী। এই মামলাটি বহু বছর ধরেই চলছে। মামলাটি বাতিলের আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি।
১৯৭৭ সালে বেঙ্গালুরু উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডিএ) দ্বারা অধিগ্রহণ করা নশঙ্করী জেলার হালাগি ভাদেরাহাল্লি গ্রামের ২ একরের বেশি একটি জমির নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। বিডিএ-র আপত্তি থাকার পরেও ২০০৭ সালে জমিটি বাতিল করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী। এই জমিটিই ২০১০ সালে ৪.১৪ কোটি টাকায় বেসরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি করা হয়।
ব্যক্তিগত অভিযোগের ভিত্তিতে লোকায়ুক্ত পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং কর্ণাটক ভূমি (হস্তান্তরের উপর নিষেধাজ্ঞা) আইনের ধারা অনুসারে তদন্ত শুরু করে। কর্ণাটক হাইকোর্টেও মামলাটি বাতিল করার আর্জি জানিয়েছিলেন কুমারস্বামী। ২০১৫ সালে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ২০১৬ সালেও সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করে।
২০১৯ সালে এই মামলার একটি ক্লোজার রিপোর্ট দাখিল করা হয়। তবে এমপি এমএলএ আদালতের বিচারক ওই রিপোর্ট খারিজ করে কুমারস্বামীকে হাজিরার নির্দেশ দেন এবং দেন সমস্ত অভিযোগ বিচারযোগ্য বলে জানান। হাজিরার নির্দেশের বিরুদ্ধে কর্ণাটক হাইকোর্টে যান কুমারস্বামী। কিন্তু হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে।
এই রায়ের পর, বিরোধীরা কুমারস্বামী ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা শুরু করেছে। কর্ণাটক কংগ্রেসের মুখপাত্র বলেন, "এই রায় প্রমাণ করে যে বিজেপি-জেডিএস জোট দুর্নীতিগ্রস্ত। সত্য সামনে আসবে।" অন্যদিকে, কুমারস্বামীর দল এই মামলাকে "রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" বলে দাবি করেছেন এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন