

উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে স্কুলে সহপাঠীদের দিয়ে এক মুসলিম ছাত্রকে চড় মারানোর ঘটনায় এবার গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ঘটনা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত সোমবার গোটা ঘটনার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিল। একজন IPS অফিসারকে ওই তদন্তের তদারকি করার জন্য নিয়োগের নির্দেশও দিয়েছে আদালত। অভিযোগ যদি সত্যি হয় তা গোটা রাজ্যের বিবেককে ধাক্কা দেবে বলেও মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ৩০ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
গত মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক সাত বছরের মুসলিম ছাত্রকে তার সহপাঠীদের দিয়েই চড় মারাচ্ছেন এক শিক্ষিকা। পড়ুয়ারা পর পর এসে মেরে যাচ্ছে ওই পড়ুয়াকে। ভিডিওতে ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্যও করতে দেখা যায় ওই শিক্ষিকাকে। সমাজমাধ্যমে এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় ওঠে দেশ জুড়ে। যদিও পরে শিক্ষিকা জানিয়েছেন, ওই পড়ুয়া হোমওয়ার্ক করে আসেনি এবং তিনি প্রতিবন্ধী তাই অন্য পড়ুয়াদের দিয়ে ছাত্রকে মেরেছেন। এবং এই ঘটনার জন্য তিনি লজ্জিত নন।
এই ঘটনা নিয়ে মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্র তুষার গান্ধীর আবেদনের শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দেয় শীর্ষ আদালত। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দায়ের করা এফআইআর নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত জানায়, আক্রান্ত ছাত্রের বাবা অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে ধর্মের জন্যই তার ছেলেকে তারই সহপাঠীদের দিয়ে মার খাওয়ানো হয়েছে। কিন্তু এফআইআর-এ সেই অভিযোগের কোনও উল্লেখ নেই কেন? শীর্ষ আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, Right to Education Act-এর আওতায় ১৪ বছরের নীচের ছাত্র-ছাত্রীদের জাত-পাত, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নিয়ে কোনোরকম বৈষম্য না করে সকলকে বিনামূল্যে উন্নতমানের শিক্ষাদান করায় পুরোপুরি ব্যর্থ উত্তরপ্রদেশ সরকার।
গোটা ঘটনাকে ‘অত্যন্ত গুরুতর ও উদ্বেগজনক’ হিসেবে উল্লেখ করে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, গোটা ঘটনা নিয়ে নতুন করে এফআইআর দায়ের করতে হবে। তদন্তের তদারকির জন্য উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনকে একজন IPS অফিসার নিযুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি, বিশেষজ্ঞ মনোবিদদের দ্বারা আক্রান্ত ওই ছাত্র এবং ঘটনায় যুক্ত শিশু পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং করানোর জন্য যোগী সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এছাড়ার ওই আক্রান্ত ছাত্রের শিক্ষার যাবতীয় খরচও বহন করতে হবে রাজ্য সরকারকে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন