
প্রয়াগরাজ মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষ্যে ‘শাহী স্নান’ করার জন্য বুধবার ভোরে ত্রিবেণী সঙ্গমে লক্ষ লক্ষ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে এই বিপত্তি ঘটেছে বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন বহু পুন্যার্থী। তাঁদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে হতাহতের সংখ্যা এখনও জানানো হয়নি। ভিড় যাতে আর না বাড়ে তাই কুম্ভ স্পেশাল ট্রেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
এখনও জারি রয়েছে উদ্ধারকাজ। ঘটনাস্থলে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাফও নামানো হয়েছে। ত্রিবেণী সঙ্গমে ‘শাহী স্নান’ আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ফোন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। পুন্যার্থীদের এই মুহূর্তে ত্রিবেণী সঙ্গমে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। পরিবর্তে নিকটবর্তী গঙ্গা ঘাটেই ‘শাহী স্নান’ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকেই কোটি মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেন প্রয়াগরাজে। মাঝরাত থেকেই গঙ্গা, যমুনা, এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী - তিন নদীর সঙ্গম ত্রিবেণী সঙ্গমে শাহী স্নান বা অমৃত স্নান করা শুরু করে দেন তাঁরা। রাত ২টা নাগাদ অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে স্নানের ঘাটে থাকা ব্যারিকেডগুলি ভেঙে যায়। তখনই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। হতাহতের পাশাপাশি বহু মানুষ তাঁদের পরিবারের থাকে আলাদাও হয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। হাসপাতাল এবং মর্গের সামনে ভিড় বাড়ছে। দ্রুততার সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পুলিশ-প্রশাসন।
এই ঘটনায় পায়ে গুরুতর চোট পাওয়া ফতেহপুরের বাসিন্দা রাম সিংহ সংবাদ মাধ্যমে জানান, "ভিড়ের মধ্যে পড়ে গিয়ে পায়ে খুব চোট পাই। সাহায্যের জন্য চিৎকার করেও লাভ হয়নি। কেউ এগিয়ে আসেননি। কোনও ক্রমে আহত অবস্থায় ভিড়ের সঙ্গে তাল রেখে বাইরে যাওয়ার গেটের কাছে পৌঁছাই। তার পর এক পুলিশকর্মী অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠান।"
আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ঘাটের পাশে একাধিক লোহার বড় বড় ডাস্টবিন রাখা ছিল। অনেকেই তা খেয়াল করেননি। তাতে ধাক্কা লেগে পড়ে যান কয়েকজন। তাঁদের মাড়িয়েই বাকিরা সামনের দিকে এগোতে গেলে বিপত্তি ঘটে।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি কুম্ভমেলায় আগুন লেগেছিল। ৫০টিরও বেশি তাঁবু আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। গীতা প্রেসের তাঁবু থেকে আগুন ছড়িয়েছিল বলে জানা যায়। পরপর দুর্ঘটনায় কুম্ভমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতেই বৈকুণ্ঠ একাদশী উপলক্ষ্যে তিরুপতি মন্দির দর্শনে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ছয় দর্শনার্থীর।
(বিস্তারিত আসছে)
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন