সামান্য রোজগার দিয়েই গ্রামে তৈরি করেছেন স্কুল, 'পদ্মশ্রী' পেলেন কমলালেবু বিক্রেতা

তাঁর স্বপ্ন, গ্রামের প্রতিটি শিশু শিক্ষিত হবে। আজ তাঁর স্কুলে ১৭৫ জন ছাত্র রয়েছে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস হচ্ছে।
হরেকালা হাজাব্বা
হরেকালা হাজাব্বাছবি - সংগৃহীত
Published on

মানবিকতাই যে মানবজীবনের মূলমন্ত্র, সেটাই ফের প্রমাণিত হল। কারা, কোন বিভাগে পদ্মশ্রী পাচ্ছেন, তার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, এবার পদ্মশ্রী প্রাপকের তালিকায় আছেন এক কমলালেবু বিক্রেতা। বাড়ি কর্ণাটকে। সে রাজ্যের ম্যাঙ্গালোর শহর ঘুরে কমলালেবু বিক্রি করাই তাঁর পেশা। নাম হরেকালা হাজাব্বা।

যদিও তাঁর অন্য পরিচয় আছে। সেই পরিচয় আগে শুধু একটা গ্রামের মানুষ জানতেন। এখন গোটা দেশ জানবে। অবাক হওয়ার বিষয় যে, তিনি কী এমন করলেন যে পদ্মশ্রী পাচ্ছেন! এবার শোনা যাক, হাজব্বার কৃতিত্বের কথা।

যে গ্রামে হাজাব্বা থাকেন সেখানে দু'দশক আগে কোনও স্কুল ছিল না। কিন্তু নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি চেয়েছিলেন গ্রামে শিক্ষার বিকাশ হোক। আর শুধু তো চাইলেই হবে না। তাকে বাস্তবায়িত করতে হবে। তার জন্য দরকার অর্থ। কিন্তু নিজেরই রোজগারও খুবই সামান্য। তবুও হল ছাড়লেন না। ওই রোজগারের কিছু অংশ জমিয়ে ২০০০ সালে একটি স্কুল স্থাপন করেন তিনি।

যা আয় করতেন, তা ব্যয় করতেন স্কুলের বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য। দিনে ১৫০ টাকা মতো রোজগার করেন। কিন্তু এদিকে একজন-দু'জন করে ক্রমশ শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। তখন ঋণ নিয়ে স্কুলের জন্য জমিও কিনে ফেলেন হাজাব্বা। ষাটোর্ধ্ব হরেকালা হাজাব্বা দৈনিক রোজগার দিয়েই স্কুল শুরু করেন স্কুল। কর্ণাটকের নিজের গ্রামে এখন ‘অক্ষর সান্তা’ নামে পরিচিত হারেকালা হাজাব্বা।

এক সংবাদমাধ্যমকে হাজাব্বা জানিয়েছেন, এক বিদেশি দম্পতি তাঁকে কমলালেবুর দাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি কিছুই বুঝতে পারেননি। তিনি টুলু ও বিয়ারি ছাড়া কোনও ভাষা জানেন না। দম্পতি চলে গেলে তাঁর খারাপ লাগে। ঠিক করেন অন্তত গ্রামের বাচ্চাদের যেন এমন সমস্যায় পড়তে না হয়। তাঁর স্বপ্ন, গ্রামের প্রতিটি শিশু শিক্ষিত হবে। আজ, স্কুলে ১৭৫ জন ছাত্র রয়েছে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস হচ্ছে।

আর এবার সেই চেষ্টারই পুরস্কার পেলেন তিনি। হাজাব্বা নিজের সীমাবদ্ধ পরিস্থিতিতে থেকেও যা করেছেন, তা অনেকেরই ভাবনার বাইরে। তাঁর আশা, সরকার তার গ্রামে উচ্চশিক্ষার জন্য এবার একটি কলেজ তৈরি করে দেবে।

হরেকালা হাজাব্বা
গত বছরের তুলনায় অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা বেড়েছে ৯১ শতাংশ - রিপোর্ট

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in