
ভারতের নির্বাচন নিয়ে মেটার সর্বোচ্চ কর্তা মার্ক জুকেরবার্গের মন্তব্য এবং তার জেরে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির পদক্ষেপের সম্ভাবনার মাঝেই মেটা প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুললেন সমাজকর্মী ও রাজ্যসভা সাংসদ সাকেত গোখলে। জানা গেছে, সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে মার্ক জুকেরবার্গের মন্তব্যের পর ‘ভুল তথ্য’ পরিবেশনের অভিযোগে মেটা কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠাতে পারে সংসদীয় কমিটি। এই কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে।
গতকাল এই সংক্রান্ত বিতর্ক প্রকাশ্যে আসার পরেই নিশিকান্ত দুবেকে এক চিঠি দিয়েছেন সাংসদ সাকেত গোখলে। যে চিঠিতে গোখলে জানিয়েছেন, বিজেপি সাংসদ দুবে যেমন বলেছেন যে “ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য” মেটাকে সংসদ এবং জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, তেমনই মেটার সাম্প্রতিক ফ্যাক্ট চেকিং সিস্টেম বন্ধ করা, ঘৃণা এবং বিভ্রান্তি সম্পর্কিত বিষয়বস্তুর নির্দেশিকাগুলিতে পরিবর্তন এবং ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুয়ো খবর এবং হয়রানি প্রচারে মেটার অ্যালগরিদমের প্রভাবও যুক্ত করা উচিত।
গোখলে জানিয়েছেন, সংসদীয় কমিটির উচিত ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি মেটার পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নিয়েও প্রশ্ন তোলা। তিনি আরও বলেন, ভারতে ঘৃণাসূচক বক্তব্য ছড়ানোর জন্য মেটা-র ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রাম উল্লেখযোগ্যভাবে অপব্যবহার করা হয়। মেটার এই দুই প্ল্যাটফর্ম এই ধরণের ঘৃণাসূচক বক্তব্য অপসারণ এবং অ্যাকাউন্টগুলির বিরুদ্ধে সঠিকভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এছাড়াও মেটা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানো নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
গোখলে তাঁর চিঠিতে জানান, নির্বাচনের সময় বেশ কয়েকজন স্বাধীন পর্যালোচক জানিয়েছেন, মেটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করে এবং রাজনৈতিক বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে অভিন্নভাবে তাদের নির্দেশ কার্যকরী করে না। এছাড়াও নির্বাচনের সময় প্রায়শই নির্বাচনী আচরণবিধি নির্দেশিকা মেনে না চলার অভিযোগ আছে। ওই পর্যালোচকদের আরও অভিযোগ, নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহারের জন্য কিছু রাজনৈতিক দলকে মেটা প্রক্সি অ্যাকাউন্ট তৈরি করার অনুমতি দিয়েছে।
গত সপ্তাহের শুক্রবার এক পডকাস্টে মেটা কর্তা মার্ক জুকেরবার্গ বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের ওপর থেকে মানুষের আস্থা নড়ে গেছে। এর প্রভাব সবথেকে বেশি পড়েছে ২০২৪-এর বিভিন্ন নির্বাচনে। ভারতের মত বিভিন্ন দেশে নির্বাচন হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রধানত ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনে হেরে গেছে। করোনা মোকাবিলা পদ্ধতি অথবা মুদ্রাস্ফীতি কিংবা করোনার সময়কালের আর্থিক নীতির কারণেই সম্ভবত বিশ্বব্যাপী এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে।
জুকেরবার্গের এই মন্তব্যের পরেই সমাজমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানান কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি বলেন, জুকেরবার্গের বক্তব্য তথ্যগতভাবে ভুল। কারণ ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে ভারতে বিজেপি জয়ী হয়েছে। মোদিজী একটানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে নজির গড়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন