রাজ ঠাকরে এবং উদ্ধব ঠাকরে (বাঁদিক থেকে)
রাজ ঠাকরে এবং উদ্ধব ঠাকরে (বাঁদিক থেকে)ছবি - সংগৃহীত

Maharashtra: 'আমরা একসাথে থাকব' - ২০ বছর পর একই মঞ্চে রাজ-উদ্ধব! মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে নয়া সমীকরণ

People's Reporter: ২০০৩ সালে বাল ঠাকরে তাঁর ছেলে উদ্ধবকে দলের কার্যকরী সভাপতি হিসেবে মনোনীত করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণাটি রাজ ঠাকরেই করেছিলেন। কিন্তু কাকার এই সিদ্ধান্তে খুশি হননি ভাইপো।
Published on

মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে (Maharashtra Politics) নয়া সমীকরণ। দু'দশক পর আবার এক মঞ্চে দেখা গেল উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray) এবং রাজ ঠাকরেকে (Raj Thackeray)। মারাঠা মানুষের স্বার্থরক্ষাকে সামনে রেখে নিজেদের পুরনো বিবাদ মেটালেন বালাসাহেব ঠাকরের ছেলে উদ্ধব এবং ভাইপো রাজ। 'আওয়াজ মারাঠিচা' (মারাঠির কণ্ঠস্বর) -এর অনুষ্ঠানের মঞ্চে উঠে একজন বললেন ‘‘একসঙ্গে থাকার জন্যই আমরা এক মঞ্চে এসেছি"। দ্বিতীয় জনের মন্তব্য, ‘‘বালাসাহেব ঠাকরে যা পারেননি, দেবেন্দ্র ফডণবীস তা সম্ভব করে দিয়েছেন"।

মহারাষ্ট্রের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিন্দিকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে বাধ্যতামূলক করার সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক তৈরি হয়েছে সে রাজ্যে। হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগে একসুরে কথা বলা শুরু করেন শিবসেনা (ইউবিটি)-র প্রধান উদ্ধব ও মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)-র প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান রাজ। ক্রমশ সেই সুর জোরালো হলেও, এতদিন পৃথক পৃথক ভাবে আওয়াজ তুলছিলেন দুই ভাই। কিন্তু শনিবার দুপুরে মুম্বইয়ের ওরলি পার্ক অডিটোরিয়ামে বিপুল জমায়েতের সামনে হাত ধরাধরি করে ঐক্যের বার্তা দিলেন দু’ভাই। মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে যা সুদূরপ্রসারী হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

মঞ্চ থেকে এমএনএস প্রধানের হুঁশিয়ারি, "এই ত্রিভাষিক ফর্মুলা আপনারা কোথা থেকে পেলেন? এটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এসেছে। এটি অন্য কোনও রাজ্যে নেই। তাহলে মহারাষ্ট্রে কেন? মহারাষ্ট্র জেগে উঠলে কী ঘটে এবার দেখবেন আপনারা। বিধান ভবনে আপনাদের ক্ষমতা থাকতে পারে, রাস্তায় আমাদের ক্ষমতা আছে।"

রাজ ঠাকরে আরও বলেন, "হিন্দি কেবল ২০০ বছরের পুরনো একটি ভাষা। মুম্বাই বা মহারাষ্ট্রের উপর হাত রাখার চেষ্টা করুন, আপনি দেখতে পাবেন কী হয়। মানুষকে মারাঠি বলতে হবে, এ নিয়ে কোনও বিতর্ক হবে না। যদি কেউ নাটক করে, তাহলে তাদের চড় মারা হবে। কিন্তু যে কোনও মানুষকে আঘাত করার দরকার নেই"।

অন্যদিকে, উদ্ধব ঠাকরে বলেন, "এখানে যারা আছেন তারা সবাই মারাঠির জন্য দলীয় বিভাজন ভুলে গেছেন। আমরা আমাদের মধ্যে দূরত্ব দূর করেছি। আমরা একত্রিত হয়েছি, আমরা একসাথে থাকব।"

বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলে, "মুম্বাই আমাদের অধিকার ছিল, আমরা লড়াই করে তা পেয়েছি। আমাদের বিজেপির 'এক জাতি, এক নির্বাচন' ধারণাটি উন্মোচিত করতে হবে। ধীরে ধীরে তারা সবকিছুকে এক করতে চায়। হিন্দু এবং হিন্দুস্তান - এই নিয়ে আমরা একমত, কিন্তু আমরা হিন্দি ভাষাকে অনুমতি দেব না।"

ঠাকরের পরিবারের ভাঙন দু'দশক হতে চলল। ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে বাল ঠাকরে তাঁর ছেলে উদ্ধবকে দলের কার্যকরী সভাপতি হিসেবে মনোনীত করেছিলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণাটি রাজ ঠাকরে নিজেই করেছিলেন। কিন্তু কাকার এই সিদ্ধান্তে খুশি হননি ভাইপো। দলীয় কর্মীরা এমনকি বাইরের পর্যবেক্ষকরাও বাল ঠাকরের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হিসেবে রাজ ঠাকরেকেই ভেবেছিলেন।

এরপর ২০০৫ সালে শিবসেনা ছেড়ে বেরিয়ে যান রাজ ঠাকরে। ২০০৬ সালে নিজের দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা গড়েন তিনি। তারপর উদ্ধবের পরিবারের ছায়াও মাড়াতে দেখা যায়নি রাজকে। পরিবাররে কোনও অনুষ্ঠান ছাড়া কোনও অনুষ্ঠানে দেখা হয়ে গেলে একে অপরকে উপেক্ষা করারই চেষ্টা করেন দুই তুতো ভাই। তবে শনিবার দৃশ্যটা অন্য। আগামী দিনে একসঙ্গে লড়াই করার অঙ্গীকারও করে গেলেন তাঁরা।

রাজ ঠাকরে এবং উদ্ধব ঠাকরে (বাঁদিক থেকে)
Bihar Polls: বিহারে ভোটার তালিকা পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ - সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ADR
রাজ ঠাকরে এবং উদ্ধব ঠাকরে (বাঁদিক থেকে)
Kanwar Yatra: ধাবা কর্মীর প্যান্ট খুলে ধর্মীয় পরিচয় জানার অভিযোগ! ফের বিতর্কে কাঁওয়ার যাত্রা

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in