
ভয়াবহ বন্যার কবলে পাঞ্জাব। এক সপ্তাহ ধরে চলা এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে এপর্যন্ত অন্তত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘর ছাড়া হাজারো মানুষ। অতিবৃষ্টি ও বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার জেরে ১০টিরও বেশি জেলা প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সোমবার চীন সফর থেকে ফিরেই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, লাগাতার বৃষ্টির ফলে ১,৩০০-র বেশি গ্রাম ডুবে গেছে। অন্তত ৬,৫৮২ জন মানুষকে ১২২টি ত্রাণশিবিরে সরিয়ে আনা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে - পাঠানকোট, গুরদাসপুর, ফাজিলকা, হোশিয়ারপুর, ফিরোজপুর ও অমৃতসর।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, আগস্ট মাসে ২৫৩.৭ মিমি বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ৭৪ শতাংশ বেশি। গত ২৫ বছরে এটাই সর্বাধিক। পাহাড়ি রাজ্যগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে শতলুজ, বিয়াস ও রাভি নদী উপচে পড়েছে। যার ফলে গ্রাম, ফসলি জমি, এমনকি বহু ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। কোথাও কোথাও রাভি নদী স্বাভাবিক প্রস্থের চেয়ে দশ গুণ চওড়া হয়ে গেছে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর (এনডিআরএফ), সেনা, বিএসএফ এবং জেলা প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত ১৪,৯৩৬ জনকে বন্যা কবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে। দুর্গম এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করে খাবার, দুধের গুঁড়ো ও শুকনো রেশন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। হোশিয়ারপুরে বহু পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে ট্র্যাক্টর-ট্রলিতে আশ্রয় নিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন, “এটি সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। মানুষকে এই সঙ্কট থেকে উদ্ধার করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিতে কেন্দ্রের কাছে আটকে থাকা ৬০,০০০ কোটি টাকা ছাড়ার দাবি জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, সোমবার দিল্লি ফেরার পর প্রধানমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে ফোন করে পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন এবং রাজ্যকে সবধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।
তবে রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। অর্থমন্ত্রী হারপাল সিং চীমা অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্র বন্যার ভয়াবহতাকে 'উপেক্ষা' করছে।
লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এক্সে লিখেছেন, “এখন সরকারের উচিত মিশন মোডে কাজ শুরু করা, যাতে কৃষক, শ্রমিক, গবাদিপশু মালিক ও সাধারণ নাগরিকরা দ্রুত সহায়তা পান।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন