দেশের অর্থনীতির শ্রীবৃদ্ধিতে 'পার্ট টাইম' চাকরি বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এই ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের অংশগ্রহণ দ্রুত গতিতে বাড়ছে। গত গত কয়েক দশকে এই ধারা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ সালের মধ্যে দেশে 'পার্ট টাইম' চাকরিতে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের অংশগ্রহন বেড়েছে। ১৫ বছর বয়সের অধিক পুরুষদের সংখ্যা ছিল ৭-৮ শতাংশ। আর মহিলা কর্মীদের সংখ্যা ছিল ২৩-২৪ শতাংশের উপর। অন্যদিকে, শহরাঞ্চলে 'পার্ট টাইম' চাকরিতে মহিলাদের সংখ্যা ছিল ১৫-১৬ শতাংশ এবং পুরুষদের হার ছিল মাত্র ৩-৪ শতাংশ।
গত মঙ্গলবার, জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (NSO) শ্রম সূচকের যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতেই উঠে এসেছে এই চিত্র।
NSO তিনটি শ্রম সূচক তৈরি করেছে -
১) লিঙ্গের ভিত্তিতে পার্ট-টাইম কর্মরত কর্মীদের অনুপাত
২) লিঙ্গের ভিত্তিতে নিয়োগকর্তাদের অনুপাত
৩) ২৫-৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের হার।
এরমধ্যেও দুটি ভাগ করা হয়েছে -
ক) যাদের পরিবারে কমপক্ষে ৩ বছরের কম বয়সী একটি শিশু আছে।
খ) যাদের পরিবারে ৩ বছর বয়সী কোন শিশু নেই।
জানা যাচ্ছে, শ্রম শক্তি সমীক্ষার তথ্য থেকে এই সূচক তৈরি করেছে জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস বা NSO। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (International Labour Organisation) তত্ত্বাবধানেই এই সূচক তৈরি করা হয়েছে।
রিপোর্টে উল্লেখ, যে সকল মহিলাদের পরিবারে ৩ বছরের কম বয়সী শিশু নেই- তারাই বেশি এগিয়ে পার্ট টাইম কাজের ক্ষেত্রে। ২৫-৪৯ বছর বয়েসের মহিলাদের মধ্যে ২০১৭-১৮ সালে অংশগ্রহনের হার ছিল ৫৮.৩৭ শতাংশ। ২০১৯-২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১.২ শতাংশ। তবে, এই ক্ষেত্রে পুরুষদের কর্মসংস্থানের হারে কোনও পার্থক্য করা হয়নি।
শুধু তাই নয়, ২০১৭-১৮ সালের তুলনায় ২০১৯-২০ সালে ৪৬-৫৯ বছর বয়সী কর্মীর সংখ্যা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার, পার্ট টাইম চাকরীতে ৬০ বছরের বেশি মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫ শতাংশ।
NSO জানিয়েছে, 'অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধির জন্য গত কয়েক দশকে পার্ট টাইম চাকরী বা কাজের প্রভাব বেড়েছে। এই প্রবণতায় মহিলাদের অংশগ্রহণ সবথেকে বেশি। তবে, একইসঙ্গে বিভিন্ন শিল্পে কর্মী সংখ্যা বাড়িয়ে কাজের ধারা পরিবর্তনের পাশাপাশি এবং শ্রমবাজারের গতি বাড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে - কর্মীদের কোনোরকম নিরাপত্তা প্রদান ছাড়াই।'
তাই, NSO সতর্ক করেছে, 'পূর্ণ সময়ের কর্মসংস্থানের চেয়ে এই ধরনের কাজের ব্যবস্থা (পার্ট টাইম কাজ) অর্থনৈতিকভাবে খুব একটা নিরাপদ নয় এবং এটি কম স্থিতিশীল।'
একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, 'নীতিনির্ধারকরা (policymakers) এই ধরণের কাজকে প্রোমোট করছে দেশের বেকারত্বের হার বৃদ্ধির জন্য। কাজের সময় বন্টনের নামে সংবেদনশীন এই বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে রাজনৈতিকভাবে।'
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।