জম্মু কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গী হানায় ২৬ জনের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে শামিল হল রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল কনফারেন্স। বুধবার এই বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা সহ বহু সাধারণ মানুষ। এদিনই তিনি দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পহেলগাঁও-এ জঙ্গী হামলায় নিহত সৈয়দ আদিল হুসেন শাহের শেষ যাত্রায় যোগ দেন।
এদিনের মিছিল থেকে আওয়াজ ওঠে, "বেগুনাহ কা কাতলাম, বন্ধ করো, বন্ধ করো!" ‘নিরাপরাধ মানুষের হত্যা বন্ধ করো’, ‘হিংসার মাধ্যমে জয় আসেনা’, ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’। মিছিল থেকে এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনায় যুক্তদের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এদিনের মিছিলে ওমর আবদুল্লা ছাড়াও ন্যাশনাল কনফারেন্স বিধায়করা শামিল হয়েছিলেন। মিছিলে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা নাসির আলম ওয়ানি এবং মুখ্যমন্ত্রীর দুই পুত্র জাহির ও জামির। নওয়া-এ-সুবার দলীয় অফিস থেকে এই মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র লাল চক পর্যন্ত যায়।
এদিনই জম্মুতে জম্মু কাশ্মীর যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। জঙ্গী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ মিছিলে বহু মানুষ যোগ দেন। মিছিল থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র পদত্যাগ দাবি করা হয়।
পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতিও লাল চকে এক প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দেন। মুফতি, পিডিপি কর্মীদের সাথে শের-ই-কাশ্মীর পার্কের কাছে পার্টির সদর দপ্তরে জড়ো হন, যেখান থেকে তারা মিছিল শুরু করেন। এছাড়াও, ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে কাঙ্গান শহরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে শামিল হন।
গতকাল সময়ের সবথেকে বড়ো জঙ্গীহানার ঘটনা ঘটেছে কাশ্মীরে। যে জঙ্গীহানায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ২৬ জন সাধারণ মানুষের। মঙ্গলবার দুপুর ২.৪৫ নাগাদ পহেলগাঁও-র বৈসরণ উপত্যকায় এই ভয়ংকর ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে স্থানীয় একজনকে বাদ দিয়ে বাকি সকলেই পর্যটক ছিলেন এবং তাঁরা পহেলগাঁও বেড়াতে গেছিলেন। মৃতদের মধ্যে দু’জন বিদেশিও আছেন।
দক্ষিণ অনন্তনাগ জেলার বৈসরণ উপত্যকায় জঙ্গীহানার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা সহ বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে, জঙ্গীরা সকলেই সেনা পোষাক পরিহিত ছিল এবং আচমকাই তাঁরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। সমস্ত ঘটনাই অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ঘটে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে দ্য রেসিস্টেন্স ফ্রন্ট নামক এক জঙ্গী সংগঠন। এই সংগঠন পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন হিসেবেই পরিচিত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন