

‘ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন’ নিয়ে বড়োসড়ো সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের তৃতীয় এনডিএ সরকার। সূত্র অনুসারে, বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ কমিটির রিপোর্ট গ্রহণ করেছে।
জানা গেছে, বুধবারেই এক দেশ, এক ভোট সংক্রান্ত রামনাথ কোবিন্দ কমিটির রিপোর্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সামনে পেশ করা হয়। গত মার্চ মাসে লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই রিপোর্ট জমা করেছিল রামনাথ কোবিন্দ কমিটি। এদিনই মন্ত্রীসভার বৈঠকে ওই রিপোর্ট পাশ করানো হয়েছে।
বিগত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি ছিল ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন নিয়ে। এবার এনডিএ সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হবার আগেই এই বিষয়ের রিপোর্টে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার অনুমোদন পাওয়া গেল। রিপোর্টে যে সমস্ত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য এক কমিটি তৈরি করার কথা বলা হয়েছে।
কমিটির মতে, এক দেশ, এক ভোট হলে তাতে খরচ বাঁচানো যাবে এবং সেই অর্থে উন্নয়ন করা যাবে। এছাড়াও এক দেশ এক ভোট হলে মানুষের ইন্ডিয়া, ভারতের বোধ জাগিয়ে তোলা সম্ভব হবে।
কমিটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, এক দেশ, এক ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সমস্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে নতুন করে ভোটার লিস্ট এবং ভোটার পরিচয় পত্র করতে হবে। বর্তমানে লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনা করে ভারতের নির্বাচন কমিশন। সমস্ত পঞ্চায়েত, পুরসভা এবং মিউনিসিপ্যালিটির নির্বাচন করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
কমিটির পক্ষ থেকে এক দেশ এক ভোট-এর জন্য ১৮টি সাংবিধানিক সংশোধন-ের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন। এই সমস্ত সংশোধনী পাশ করাতে হবে সংসদে।
সূত্র অনুসারে, আইন কমিশন চায় লোকসভা, বিধানসভা এবং পুরভোট ও পঞ্চায়েত ভোট একসঙ্গে করাতে। যা ২০২৯ থেকে শুরু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদিও রামনাথ কোবিন্দ-এর কমিটির প্রথমে একসাথে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছে এবং পরবর্তী ১০০ দিনের মধ্যে পুর ও পঞ্চায়েত নির্বাচন করার কথা জানিয়েছে।
প্রথম থেকেই ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ সমস্ত বিরোধী দল। বিরোধীদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদী সরকার আসলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আদলে নতুন ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী। আঞ্চলিক দলগুলির মতে এই নীতি চালু হলে তাদের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
এই সপ্তাহের সোমবারেই এক সাংবাদিক সম্মেলনে ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল কংগ্রেস। ওইদিন কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বর্তমান সরকার শুধুমাত্র গরম গরম কথা বলে সরকারে টিকে থাকতে চাইছে। সুপ্রিয়া শ্রীনাতে আরও বলেন, ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন-এর বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও খসড়া প্রস্তাব পেশ করা হয়নি। বাস্তব হল, এই প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। বাস্তব হল কেন্দ্রের সরকার এই প্রসঙ্গে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি। বাস্তব হল এরকম অনেক বিধানসভা আছে যেগুলো এভাবে ভাঙা যায় না।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন