
আগামী বছরেই দেশ জুড়ে লোকসভা নির্বাচন। দিনক্ষণ এখনও ঠিক না হলেও আনুমানিক হাতে গোনা আর কয়েকমাস পরেই সাধারণ নির্বাচনের দামামা বাজবে গোটা দেশে। আর তার আগেই ‘এক দেশ এক ভোট’ (One-Nation One-Election) নীতি কার্যকর করতে উঠেপড়ে লেগেছে কেন্দ্রীয় মোদী সরকার। কিছুদিন আগেই সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হওয়ার এক মাসের মাথায় আবার বিশেষ সংসদ অধিবেশন ডেকেছে সরকার। সূত্রের খবর, ওই অধিবেশনেই পেশ করা হতে পারে ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত বিল।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী টুইটারে (বর্তমানে X নামে পরিচিত) আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অধিবেশন ডাকার কথা জানিয়েছেন। হঠাৎ করে এই ‘বিশেষ অধিবেশন’-এর ডাক এবং এই অধিবেশনের আলোচ্য বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে বিরোধী মহলে।
তবে সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশ জুড়ে ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি চালু করার উদ্দেশ্যেই এই বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত বিল পেশ করা হতে পারে। পাশাপাশি, পেশ করা হতে পারে ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’ বিলও।
কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর করার জন্য ইতিমধ্যেই আইন কমিশনের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে কেন্দ্র। সেই বৈঠকের পরেই এই নীতি কীভাবে কার্যকর করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করেছে বিজেপি সরকার। দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সংসদের বিশেষ অধিবেশনে ওই কমিটি এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
গত বাদল অধিবেশনে এই ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি চালু করার পক্ষে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন মেঘওয়াল যুক্তি দিয়েছিলেন, “এই নীতি কার্যকর করা হলে নির্বাচনের খরচ অনেকটাই কমবে। আবার বারবার নির্বাচনের আদর্শ বিধির জন্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ আটকে থাকবে না। পাশাপাশি, এক ভোটার তালিকাতেই লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করা হলে সরকারি কর্মীদের বারবার তালিকা তৈরি করতে হবে না।” ২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়েই এই ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি চালু করার কথা বলেন নরেন্দ্র মোদী।
তবে বিরোধীরা প্রথম থেকেই এই নীতির বিরোধিতা করেছে। বিজেপি বিরোধী ‘INDIA’ শিবিরের আসন সমঝোতার আগেই এই নীতি প্রকাশ করে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করিয়ে দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সঙ্গে আঞ্চলিক দলগুলির বিবাদ বাধানোই মোদী সরকারের মূল লক্ষ্য বলে দাবি করেছে বিরোধী মহল।
তাঁদের আরও বক্তব্য, এই নীতি চালু করে ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ধাঁচে ভোট শুরু করতে চায় গেরুয়া শিবির। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী।
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন