
আগামী সোমবার ২২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে পণ্য ও পরিষেবা করের (জিএসটি) নতুন হার কার্যকর হচ্ছে। এর ফলে বাজারে একদিকে অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমবে, অন্যদিকে বিলাসবহুল পণ্যের উপর চাপবে অতিরিক্ত কর। ক্রেতা–বিক্রেতা, দুই পক্ষের কাছেই এর প্রভাব স্পষ্ট হবে আগামী সপ্তাহ থেকে।
পুরনো প্যাকেটে নতুন দামের নিয়ম
নতুন কর কাঠামো চালু হলেও, দোকানে এখনো যে সব পণ্য পুরনো দামে মুদ্রিত প্যাকেটে রয়েছে, তা নিয়েই মূল উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। সেই সংশয় কাটাতেই কেন্দ্রীয় উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি বলছে—প্রস্তুতকারীরা আর সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে নতুন দাম ঘোষণা করতে বাধ্য নন। বরং পুরনো মোড়কের উপর নতুন দাম লেখা স্টিকার লাগিয়ে বিক্রি করা যাবে।
ফলে এক প্যাকেটে থাকবে দুটি দাম—একটি ছাপা পুরনো, আরেকটি হালনাগাদ কর অনুযায়ী। মার্চ ৩১ পর্যন্ত অথবা দোকানের স্টক শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। তবে কোম্পানিগুলিকে নতুন দামের তালিকা খুচরো বিক্রেতা, পাইকারি ব্যবসায়ী এবং লিগ্যাল মেট্রোলজি কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কী কী পণ্যের দাম কমছে
দুধ, ছানা, পনির, রুটি, পাউরুটি—এসব থেকে জিএসটি সম্পূর্ণ তুলে নেওয়া হয়েছে।
কনডেনসড মিল্ক, মাখন, ঘি, তেল, চিজ, বাদাম, খেজুর, আম, পেয়ারা, আনারস প্রভৃতি ফল—এখন ৫% করের আওতায়।
রান্না করা মাংস, মাছ, চিনি, নুডলস, পাস্তা, সব্জি—করহার নেমে এল ১২% থেকে ৫%-এ।
জ্যাম, জেলি, মাশরুম, নারকেলের জল, সর্ষে, ভুজিয়া, ২০ লিটারের পানীয় জল—সবই এখন সস্তা।
মধু, চকোলেট, কর্নফ্লেকস, কেক, পেস্ট্রি, আইসক্রিম, জিলেটিন—১৮% কর থেকে নেমে ৫%।
স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমা পরিষেবা পুরোপুরি করমুক্ত।
বিড়ির পাতা ও বিড়ির কর কমেছে যথাক্রমে ১৮% থেকে ৫% ও ২৮% থেকে ১৮%-এ।
রাসায়নিক পদার্থ—সালফিউরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক অ্যাসিড, অ্যামোনিয়া—সবই এবার ৫% হারে।
টিভি, এসি, ছোট গাড়ি, ৩৫০ সিসি-র নীচে বাইক—এগুলির কর ১৮% হওয়ায় দাম কমবে।
কোন কোন জিনিসের দাম বাড়ছে
বিলাসবহুল গাড়ি, রেসিং কার, প্রাইভেট জেট, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল—৪০% জিএসটি।
পানমশলা, অতিরিক্ত চিনি যুক্ত পানীয়, কার্বনেটেড সফট ড্রিঙ্কস—২৮% থেকে বেড়ে ৪০%।
সরকার আশা করছে, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খরচে খানিকটা স্বস্তি মিলবে। তবে খুচরো বাজারে যাতে বিভ্রান্তি না ছড়ায়, সে জন্য প্রস্তুতকারক সংস্থা থেকে শুরু করে দোকানদার পর্যন্ত সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। ব্যবসায়ী মহলের আশঙ্কা—গ্রামের বা ছোট দোকানগুলিতে এখনও পুরনো দামে বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক তাই প্রান্তিক স্তরে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন