সমাজবিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে রামায়ণ-মহাভারত! NCERT-র সুপারিশের তীব্র সমালোচনায় বিরোধী দল ও শিক্ষাবিদরা

People's Reporter: NCERT-র মতে, “সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে রামায়ণ, মহাভারত থাকলে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অল্প বয়স থেকে দেশপ্রেম তৈরি হবে। ফলে চাকরি বা পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা কমবে।”
সমাজবিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে রামায়ণ-মহাভারত! NCERT-র সুপারিশের তীব্র সমালোচনায় বিরোধী দল ও শিক্ষাবিদরা
গ্রাফিক্স - আকাশ
Published on

স্কুল পাঠ্যবইয়ে এবার স্থান পাবে রামায়ণ ও মহাভারত! সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর সমাজবিজ্ঞানের বইয়ে দেশের দুই প্রাচীন মহাকাব্যকে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়ে সুপারিশ করল ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটি।

এনসিইআরটি-র এই পদক্ষেপকে বিজেপি নেতারা সাধুবাদ জানালেও বিরোধীপক্ষ এর চরম বিরোধিতা করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিহাস ও পুরানকে গুলিয়ে দিতে চাইছে।

দেশের স্কুলগুলিতে সমাজবিজ্ঞানের পাঠ্যক্রম সংশোধনের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি করেছিল এনসিইআরটি। মঙ্গলবার সেই কমিটির তরফে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রককে সমাজবিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে রামায়ণ ও মহাভারত অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই বিষয়ে ওই কমিটির প্রধান তথা ইতিহাসবিদ সিআই আইজ্যাক জানিয়েছেন, “আমরা মনে করি, সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে রামায়ন ও মহাভারত থাকলে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অল্প বয়স থেকেই আত্মসম্মান, দেশপ্রেম ও নিজের দেশের জন্য গর্ববোধ তৈরি হবে। ফলে পরবর্তীতে চাকরি বা পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে।”

আইজ্যাকের মতে, পড়ুয়াদের নিজের শিকড় সম্পর্কে ধারণা থাকা খুব প্রয়োজন। এর ফলে তাঁদের মধ্যে এই দেশ ও দেশের সংস্কৃতি নিয়ে আগ্রহ জন্ম নেবে। বর্তমানে কিছু বোর্ডে রামায়ণ ও মহাভারত পড়ানো হয়। কিন্তু এই ঐতিহাসিক মহাকাব্যগুলিকে মিথ বা পুরান হিসেবে পড়ানো হবে কেন? শিক্ষার্থীরা এই মহাকাব্যগুলি থেকে যদি কিছু শিখতেই না পারে, তাহলে তো সেই শিক্ষাব্যবস্থা অর্থহীন হয়ে যায়।”

এদিকে জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক তনিকা সরকার এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে জানিয়েছেন, “এই মহাকাব্য দুটি অবশ্যই দেশের সংস্কৃতির অঙ্গ। কিন্তু এগুলি সাধারণত ব্রাহ্মণ্য ধর্মগ্রন্থ। তাই এগুলিকে মিথ হিসেবেই ধরা হয়ে থাকে। আর সমাজবিজ্ঞান প্রধানত তথ্যনির্ভর বিষয়। মহাকাব্যগুলিতে বর্ণিত বিষয়গুলিকে তথ্য দিয়ে যাচাই করা যায় না। তাই এই ধর্মগ্রন্থগুলিকে পড়াতে হলে রিলিজিয়াস স্টাডি-জাতীয় কোনও বিষয় রাখা উচিত।”

তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এই নিয়ে জানিয়েছেন, “এর আগেও বিজেপি আমলে শিক্ষায় গৈরিকীকরণের চেষ্টা করা হয়েছে। মোদী সরকার ইতিহাসকেই পাল্টে দিতে চায়। মানুষ কিন্তু এত পরিবর্তন আদৌ পছন্দ করে না।”

তবে, এইসব বিরোধিতা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি এনসিইআরটি। বরং বিশেষ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, সুভাষচন্দ্র বসুর মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবন নিয়েও বিস্তারিতভাবে পড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে এনসিইআরটি। পাশাপাশি, প্রত্যেকটি ক্লাসরুমের দেওয়ালে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আঞ্চলিক ভাষায় ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা লিখে রাখারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সমাজবিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে রামায়ণ-মহাভারত! NCERT-র সুপারিশের তীব্র সমালোচনায় বিরোধী দল ও শিক্ষাবিদরা
Ramdev: ভুয়ো, বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হবে! রামদেবের পতঞ্জলিকে হুঁশিয়ারি শীর্ষ আদালতের
সমাজবিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে রামায়ণ-মহাভারত! NCERT-র সুপারিশের তীব্র সমালোচনায় বিরোধী দল ও শিক্ষাবিদরা
National Herald: ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বিপাকে কংগ্রেস, ইডির হাতে বাজেয়াপ্ত ৭৫১ কোটি টাকার সম্পদ

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in