
ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের দাবি কেন নস্যাৎ করছেন না মোদী, একাধিকবার এই প্রশ্ন তুলেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বুধবার নিজেই সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন তিনি। তাঁর মতে, গৌতম আদানির কারণেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী! তাঁর দাবি, আমেরিকায় আদানির বিরুদ্ধে যে তদন্ত চলছে, সেই তদন্তের ভয়েই মোদীকে চুপ করিয়ে রেখেছেন তাঁর বন্ধু আদানি।
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এবং অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির কথা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও তাঁর এই দাবি আস্বিকার করেছে ভারত সরকার। কিন্তু এরপরও বারংবার ট্রাম্প প্রকাশ্যে দাবি করে এসেছেন, দুই দেশের যুদ্ধবিরতি তাঁর মধ্যস্থতাতেই হয়েছে। ভারতের দাবি, পাকিস্তানের অনুরোধেই এই সংঘর্ষবিরতি। এতে কোনও তৃতীয় দেশের হস্তক্ষেপ নেই। যদিও প্রকাশ্যে এই নিয়ে মোদী কোনও মন্তব্য করেননি।
আর এই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন বিরোধীরা। সংসদে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনা চলাকালীন রাহুল গান্ধী মোদিকে ট্রাম্পের এই দাবি নিয়ে মুখ খোলার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী নিজের ভাষণে সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন। অবশেষে সেই প্রশ্নের উত্তর নিজেই দিলেন রাহুল।
বুধবার সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে রাহুল লেখেন, “ভারত, দয়া করে বুঝুন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারবেন না কারণ আমেরিকায় আদানিদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাছাড়া রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে মোদি এবং AA-র (পড়ুন আদানি-আম্বানি) কী চুক্তি হয়েছে সেটা প্রকাশ্যে চলে আসার ভয়ও রয়েছে। মোদির হাত বাঁধা"।
প্রসঙ্গত, গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগের তদন্ত করছে মার্কিন প্রশাসন। গৌতম আদানির সংস্থা আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের সাথে মার্কিন সংস্থা অ্যাজুরে পাওয়ার-এর চুক্তি হয়। যৌথ উদ্যোগে ১২ গিগাওয়াট সৌরশক্তি বিভিন্ন রাজ্যে বিক্রি করা হবে - এমনই লক্ষ্য ছিল প্রকল্পটির। প্রকল্পটি বিপুল লাভজনক। ২০ বছরে সংস্থাটি প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা লাভ করত। এই প্রকল্পের জন্যই ঘুষ দিতে চেয়েছিলেন আদানি।
গত ২১ নভেম্বর ইস্টার্ন ডিসট্রিক্ট কোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘প্রমাণ-সহ অভিযোগপত্র’ (ইনডিক্টমেন্ট) পেশ করেছিল আমেরিকার ন্যায়বিচার দফতর এবং বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি। অভিযোগ, ঘুষের কথা গোপন করেই আমেরিকা ব্যাঙ্ক এবং আমেরিকার লগ্নিকারীদের থেকে প্রকল্পের জন্য কোটি কোটি টাকা তোলে আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড।
এরপরেই ৩টি মামলা হয় মার্কিন মুলুকে। এই ৩টি মামলা হল ইউএস বনাম আদানি ও অন্যান্যরা (আদানির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা), সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) বনাম আদানি ও অন্যান্যরা (আদানির বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা), এবং এসইসি বনাম ক্যাবানেস (অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা)। এগুলোর তদন্ত চলছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন