
ভারতের ২৬ তম মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে জ্ঞানেশ কুমারের নাম ঘোষণা করা হল। আগামী বুধবার থেকে মেয়াদ শুরু হবে তাঁর। মেয়াদ চলবে ২০২৯ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের মেয়াদ।
গত বছরই নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন জ্ঞানেশ কুমার। সোমবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করল কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন কমিটির বৈঠকে তাঁর নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। যদিও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রায় না নেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখা হোক এই সিদ্ধান্ত। বুধবার রয়েছে এই মামলার শুনানি।
অন্যদিকে, জ্ঞানেশ কুমারের নিয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের যে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তাতে প্রধানমন্ত্রী, তাঁর মন্ত্রিসভার এক সদস্য এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রয়েছেন। আগে এই কমিটিতে থাকতেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। নতুন কমিটি নিয়ে বিল পাশ হতেই বিরোধীরা এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এমন বিল এনেছে কেন্দ্র সরকার। সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিচারে সহজেই যাতে নিজেদের পছন্দের লোক নিয়োগ করতে পারে কমিশনে। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও সেই মামলা গৃহীত হয়নি বলে খবর।
জ্ঞানেশ কুমার ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিযুক্ত হন। তাঁর দু’মাস আগেই আইএএস অফিসার হিসাবে অবসর নেন ৬১ বছরের জ্ঞানেশ। রাজীব কুমার, সুখবীর সিংহ সন্ধু এবং জ্ঞানেশ কুমার মিলে লোকসভা নির্বাচন, জম্মু ও কাশ্মীর নির্বাচন, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি নির্বাচন সম্পন্ন করান।
জ্ঞানেশ কুমারের কার্যকালের মধ্যে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, তামিলনাড়ু, কেরালা-সহ ২০ টি বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। এছাড়া পরবর্তীতে রয়েছে রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন। ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যাবে তাঁর কার্যকালের মধ্যে।
উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা জ্ঞানেশ কুমার কানপুর আইআইটি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। এরপর ১৯৮৮ ব্যাচের কেরালা ক্যাডারের অফিসার তিনি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে কো-অপারেশন মন্ত্রকের সচিব ছিলেন তিনি। এছাড়া আধা বাহিনীর সচিব, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব পদেও দায়িত্ব সামলেছেন।
২০১৯ সালের আগষ্টে ৩৭০ ধারা নিয়ে যে সিদ্ধান্ত সরকারের তরফে নেওয়া হয়, তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন জ্ঞানেশ কুমার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন