
* দেশের বৃহত্তম মেডিকেল কলেজ দুর্নীতি প্রকাশ্যে।
* এই দুর্নীতির সঙ্গে প্রভাবশালী আমলা, শিক্ষাবিদ থেকে স্বঘোষিত ধর্মগুরু - জড়িত অনেকেই বলে অভিযোগ।
* এই দুর্নীতিতে হাত বদল হয়েছে কোটি কোটি টাকা।
* বেশ কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে এই দুর্নীতির জাল বলে জানিয়েছে সিবিআই।
দেশের ইতিহাসে 'বৃহত্তম' মেডিকেল কলেজ দুর্নীতির পর্দাফাঁস করল সিবিআই। যেখানে জড়িয়ে রয়েছেন একাধিক রাজ্যের প্রভাবশালী আমলা, শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে এক স্বঘোষিত ধর্মগুরুও। যাঁদের সম্মিলিত যোগসাজশে গড়ে উঠেছিল এই দুর্নীতির পাহাড়।
পুরো ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে রায়পুরের ‘শ্রী রাওয়াতপুরা সরকার ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ (SRIMSR)’-এ ঘুষের বিনিময়ে স্বচ্ছ পরিদর্শন রিপোর্ট পাওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে। CBI ইতিমধ্যে তাদের FIR-এ ৩৫ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। ৩ জন চিকিৎসক সহ ৮ জনকে ৫৫ লক্ষ টাকার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। যার মধ্যে আছেন রাওয়াতপুরা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অতুল কুমার তিওয়ারি। তিনি অবৈধভাবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য গীতাঞ্জলি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ময়ূর রাওয়ালের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন বলে অভিযোগ। রাওয়াল ২৫-৩০ লক্ষ টাকা দাবি করেন বলে জানা যায়।
CBI-এর সূত্র অনুযায়ী, নিম্নমানের মেডিকেল কলেজগুলিকে অবৈধভাবে স্বীকৃতি দিতে এই চক্র ঘুষ, জাল নথি, ভুয়ো কর্মী ও রোগী ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে কোটি কোটি টাকার বেআইনি লেনদেন চালিয়ে গেছে।
এই ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তাঁরা হলেন -
* ডিপি সিং (প্রাক্তন ইউজিসি চেয়ারম্যান ও বর্তমান টিআইএসএস চ্যান্সেলর)
* রাওয়াতপুরা সরকার (স্বঘোষিত ধর্মগুরু ও বিতর্কিত ট্রাস্টের প্রধান)
* সুরেশ সিং ভাদোরিয়া (ইন্দোরের ইনডেক্স মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান)
* সঞ্জয় শুক্লা (অবসরপ্রাপ্ত IFS ও প্রাক্তন RERA চেয়ারম্যান)
* ময়ূর লাল (গীতাঞ্জলী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার)
CBI জানিয়েছে, অন্তত ৪০টিরও বেশি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ভুয়ো তথ্য, নকল পরিদর্শন ও জাল রেকর্ড দেখিয়ে NMC (ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন)-র স্বীকৃতি লাভ করেছে। একেকটি কলেজ থেকে ৩-৫ কোটি টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে অনুমোদনের বিনিময়ে।
CBI-এর মতে, MARB-এর (Medical Assessment and Rating Board) প্রাক্তন সদস্য জিতু লাল মীনা এই চক্রের মূল মধ্যস্থতাকারী ছিলেন। এমনকি ঘুষের অর্থ ব্যবহার করে রাজস্থানে ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি হনুমান মন্দির নির্মাণ করার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
রবিশঙ্কর মহারাজ (স্বঘোষিত ধর্মগুরু) যিনি রাওয়াতপুরা সরকার নামেও পরিচিত, তিনি রাজনৈতিক ও আমলা মহলে চেনা মুখ। তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখল, ধর্মীয় কার্যকলাপে শিক্ষার্থীকে বাধ্য করা এবং মহিলাদের হয়রানির মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে অযাচিত সুবিধা পাওয়ার অভিযোগে তাঁর ট্রাস্ট দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে।
এই চক্রের জাল দক্ষিণ ভারতেও বিস্তৃত বলেই সিবিআই সূত্রে খবর। অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও বিশাখাপত্তনমে এজেন্টদের মাধ্যমে ভুয়ো কর্মী ও রোগী দেখিয়ে অনুমোদন নেওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। এজেন্ট বি হরি প্রসাদ, অঙ্কম রামবাবু ও কৃষ্ণ কিশোরের নামও উঠে এসেছে।
Keywords: Medical College Scam, CBI, Corruption, Crores, Bureaucrats, Godmen
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন