
লাগাতার মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে আরও বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh)। মঙ্গলবার থেকে ১৪ বার মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে সেরাজ্যে। টানা বৃষ্টির ফলে ধস নেমেছে রাজ্যের একাধিক জায়গায়। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার জেরে এখনও পর্যন্ত ৬৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। নিখোঁজ বহু এবং আহত হয়েছেন ১১০ জন। অন্যদিকে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে গোটা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৭০০ কোটির সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত সমস্ত জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।
এই বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মান্ডি জেলা। সেখানেই ১৭ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এছাড়া মান্ডিতে নিখোঁজ কমপক্ষে ৪০ জন। মান্ডির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হল থুনাগ এবং বাগসায়েড়। এমনকি মান্ডির কারসোগ এবং ধর্মপুর এলাকাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে।
এছাড়া কাংড়ায় ১৩ জন, চাম্বায় ছ'জন এবং শিমলায় পাঁচজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বিলাসপুর, হামিরপুর, কিন্নৌর, কুল্লু, লাহুল স্পিতি, সিরমৌর, সোলান এবং উনা থেকেও মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যে আহতের সংখ্যাও ১০০ ছাড়িয়েছে। মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে রাস্তাঘাট, পানীয় জল প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দুর্যোগের ফলে গোটা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৭০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখন উদ্ধারকাজ, নিখোঁজদের খোঁজে তল্লাশি অভিযানকেই গুরুত্ব দিতে চাইছেন তারা, এমনই জানিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বিশেষ সচিব ডিসি রানা।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, এই বিপর্যয়ের জেরে কয়েকশো বাড়ি ভেঙে পড়েছে। হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। ১৪ টি সেতু জলের তোড়ে ভেঙে গেছে। ৩০০ গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও রাজ্য জুড়ে ৫০০টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ৫০০টিরও বেশি বিদ্যুৎ বিতরণ ট্রান্সফরমার বা DTR অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
বিপর্যয়ের জেরে যারা বাড়িঘর হারিয়েছেন তাঁদের ভাড়া থাকার জন্য ৫০০০ টাকা প্রদানের ঘোষণা করেছেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু। পাশাপাশি, ত্রাণ ও তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে, বিপর্যয় মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন