
প্রায় এক মাস ধরে জাতিগত দাঙ্গায় অশান্ত মণিপুর। এখনও হিংসার আগুনে জ্বলছে মানুষের ঘর-বাড়ি। রেহায় পাননি শাসকদলের মন্ত্রী, বিধায়করা। বুধবার রাজ্যের PWD, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী কনথৌজাম গোবিন্দাসের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা।
অন্যদিকে, এই অশান্তির আবহে উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি রাজ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামেও লেগেছে আগুন। গত এক মাসের ব্যবধানে অধিকাংশ জিনিসের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মণিপুরবাসী।
সূত্রের খবর, জাতিগত হিংসা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে পারছে না মণিপুরের বিজেপি সরকার। এমনকি, কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না সরকার। এই অভিযোগ তুলে বুধবার, বিষ্ণুপুর জেলায় মন্ত্রী কনথৌজাম গোবিন্দাসের বাড়ি ভাংচুর করে উত্তেজিত জনতা। জানা যাচ্ছে, এই সময় বাড়িতে ছিলেন না মন্ত্রী ও তাঁর পরিবার। এদিন জানালা-দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালায় প্রায় ১০০ জন উত্তেজিত জনতা।
অন্যদিকে এই পরিস্থিতিতে রাজধানী ইম্ফলে দেখা গিয়েছে রান্নার গ্যাসের আকাল। গ্রাহকদের কাছে গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণ করছে না এলপিজি’র এজেন্সিগুলি। অথচ কালোবাজারে টাকা দিলেই মিলছে গ্যাস। এক সিলিন্ডার গ্যাসের দাম নেওয়া হচ্ছে ১,৮০০ টাকা। শুধু গ্যাসই নয়, পেট্রলও মহার্ঘ হয়ে উঠছে। এক লিটার জ্বালানি তেলের দাম দাঁড়িয়েছে ১৭০ টাকা।
ইম্ফল পশ্চিমের এক সরকারি স্কুলের শিক্ষক মঙ্গলেম্বি চানাম জানান, এলপিজি সিলিন্ডার এবং পেট্রোল ছাড়াও চাল, আলু, পেঁয়াজ এবং ডিমের মতো জিনিস বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে।
তিনি বলেন, ‘আগে, ৫০ কেজির এক বস্তা সুপারফাইন চালের দাম ছিল ৯০০ টাকা। কিন্তু এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকায়। আলু ও পেঁয়াজের দামও ২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা। ৬ টাকার ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। সাধারণভাবে, বাইরে থেকে আনা সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।'
উল্লেখ্য, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র ইউনিয়নের মহামিছিলের পরেই নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে অশান্তির ঘটনায় ৭১ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ।
অশান্তির এই আবহে ভিন রাজ্য থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী লরি ঢুকতে পারছে পাহাড়ি রাজ্যে। ফলে জিনিসপত্রের আকাল দেখা দিয়েছে। আর তাতেই পোয়াবারো হয়েছে কালোবাজারিদের।