
মণিপুরের বিজেপি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিল এনডিএ জোটসঙ্গী নীতিশ কুমারের জেডিইউ। যদিও এই সমর্থন তোলায় এন বীরেন সিং সরকারের কোনও সমস্যা না হলেও বিহার বিধানসভা নির্বাচনের বছরে জেডিইউ-এর এই পদক্ষেপে গুঞ্জন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। জেডিইউ মণিপুর জানিয়েছে তাদের একমাত্র বিধায়ক মহম্মদ আবদুল নাসির এখন থেকে বিরোধী আসনে বসবেন। সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেবার কথা রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লাকে চিঠি দিয়ে একথা জানিয়েছে জেডিইউ মণিপুর।
যদিও এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই দলের মণিপুর শাখার সভাপতিকে বরখাস্ত করেছে জেডিইউ। এক ভিডিও বার্তায় জেডিইউ জাতীয় মুখপাত্র রাজীব রঞ্জন প্রসাদ জানিয়েছেন, মণিপুর, বিহার সহ দেশের সর্বত্র বিজেপির সঙ্গে জেডিইউ জোট অটুট রয়েছে। যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েও পরে বিশেষ কোনও কারণে পিছু হটেছে জেডিইউ এবং অবস্থার সামাল দিতে দলের মণিপুর শাখার সভাপতিকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
২০২২-এর মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনে জেডিইউ-এর ৬ বিধায়ক নির্বাচিত হলেও ফল ঘোষণার পরেই ৫ দলীয় বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেন। যদিও এখনও পর্যন্ত এই বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিষয়টি এখনও স্পিকারের ট্রাইবুনালে আছে। একথা জানিয়েছেন জেডিইউ মণিপুর-এর সভাপতি কেশ বীরেন সিং।
উল্লেখযোগ্যভাবে কেন্দ্রের বর্তমান এনডিএ সরকারের অন্যতম শরিক জেডিইউ। নীতিশ কুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডুর জেডিইউ এবং তেলেগু দেশম দলের সমর্থনের ওপরেই কার্যত এনডিএ সরকার টিকে আছে। পাশাপাশি এই বছরেই বিহার বিধানসভার নির্বাচন। যেখানে জেডিইউ সুপ্রিমো নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার ক্ষমতাসীন।
এর আগে মণিপুরের হিংসার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে এন বীরেন সিং-এর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে গতবছরের নভেম্বর মাসে সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। দলের নেতা কনরাড সাংমা সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে জানান এই সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ‘সম্পূর্ণ ব্যর্থ’। যদিও এনপিপি-র সমর্থন প্রত্যাহারেও এন বীরেন সিং সরকারের কোনও সংকট হয়নি।
৬০ সদস্য বিশিষ্ট মণিপুর বিধানসভায় বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। তাদের বিধায়ক সংখ্যা ৩২। এর সঙ্গে ৫ জেডিইউ বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭। যদিও এর মধ্যে কুকি-জো গোষ্ঠীর ১০ বিধায়ক সরকারের সঙ্গে দূরত্ব রক্ষা করে চলছেন এবং যাদের মধ্যে ৭ জন বিজেপি বিধায়ক। এঁরা সরকারের সমালোচনা করে বিবৃতি দিলেও এখনও পর্যন্ত পদত্যাগ করেননি।
অন্যদিকে মণিপুরে এনডিএ-তে বিজেপি, এনপিপি ছাড়াও ছিল জেডিইউ এবং এনপিএফ। যার মধ্যে জেডিইউ-র বিধায়ক সংখ্যা ১ এবং এনপিএফ-এর বিধায়ক সংখ্যা ৫। সমর্থন আছে ৩ নির্দল বিধায়কেরও। ফলে এনপিপি-র ৭ বিধায়ক সমর্থন প্রত্যাহার করলেও এনডিএ শিবিরের বিধায়কসংখ্যা ৪৫। জেডিইউ-এর ১ জন সমর্থন প্রত্যাহার করলে তা কমে হবে ৪৪। তাই আপাতত এন বীরেন সিং সরকারের সামনে কোনও সংকট নেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন