
পদত্যাগ করলেন মহারাষ্ট্রের খাদ্যমন্ত্রী ধনঞ্জয় মুন্ডে। বীড জেলার মাসাজোগ গ্রামের সরপঞ্চ সন্তোষ দেশমুখের হত্যাকাণ্ডে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ওয়াল্মিক করাড়কে গ্রেপ্তার করার পর লাগাতার সমালোচনার মুখে পড়ছিলেন এনসিপি নেতা মুণ্ডে। তাঁর জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছিল বলে জানা গেছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবিশের নির্দেশে মঙ্গলবার মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিলেন মুণ্ডে।
পদত্যাগ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বিধানসভায় পৌঁছানোর পর দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেন, "মন্ত্রী ধনঞ্জয় মুন্ডে আমার কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আমি তা গ্রহণ করেছি। পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য আমি তা রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছি।" এরপর সাংবাদিকদের আর কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই ভেতরে চলে যান তিনি।
রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী এবং এনসিপি প্রধান অজিত পাওয়ার বলেন, "নৈতিকতার ভিত্তিতে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।"
মাসাজোগ গ্রামের সরপঞ্চ সন্তোষ দেশমুখকে ৯ ডিসেম্বর অপহরণ করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তিনি স্থানীয় একটি বায়ুকল কোম্পানির থেকে বলপূর্বক তোলা আদায়ের সময় অভিযুক্তদের বাধা দিয়েছিলেন। এর কয়েকদিন পরই এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে ধনঞ্জয় মুন্ডের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ওয়াল্মিক করাড় সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে রাজ্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা আদালতে এই মামলায় ১,২০০ পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করেছে সিআইডি। সোমবার চার্জশিটের সাথে জমা দেওয়া দেশমুখকে হত্যার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। এই নিয়ে তীব্র হট্টগোল বিধানসভায়। বিরোধীরা মামলার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে মুন্ডের পদত্যাগ দাবি করে। চাপের মুখে পড়ে মঙ্গলবার মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন মুণ্ডে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সন্তোষ দেশমুখকে গ্যাস পাইপ, লোহার রড, লাঠি এবং ধারালো কোনও জিনিস দিয়ে দু'ঘন্টারও বেশি সময় ধরে পেটানো হয়েছে। অভিযুক্তরা নির্যাতনের ১৫টি ভিডিও করেছে। আটটি ছবি তুলেছে। চার্জশিটে উল্লেখিত ভিডিওগুলির মধ্যে একটিতে পাঁচ অভিযুক্তকে সাদা পাইপ এবং লাঠি দিয়ে মিঃ দেশমুখকে মারধর করতে এবং লাথি ও ঘুষি মারতে দেখা যাচ্ছে। দেশমুখকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে দেশমুখের গোটা শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের একজন তার উপর প্রস্রাব করছেন।
ছবি ভাইরাল হওয়ার পর দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন মুণ্ডেও। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "গতকাল প্রকাশিত ছবিগুলি দেখে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। আমার নৈতিকতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং গত কয়েকদিন ধরে আমার স্বাস্থ্য ভালো না থাকায়, ডাক্তার আমাকে আগামী কয়েকদিন বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, তাই, চিকিৎসাগত কারণেও, আমি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছি।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন