
ক্ষমতায় এসে প্রথম বাজেটেই মহিলা ভাতায় বরাদ্দ কমিয়ে দিল দেবেন্দ্র ফড়নবীসের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকার। পূর্ববর্তী একনাথ শিন্ডের সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত ‘লেড়কি বহিন’ প্রকল্পের জন্য বাজেট বরাদ্দ ১০,০০০ কোটি টাকা কমিয়ে দেওয়া হলো এবার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা।
গত বছরের শেষের দিকে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। তার কয়েক মাস আগে এই প্রকল্প চালু করেছিল একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যে বসবাসকারী ২৫-৬৫ বছর বয়সি মহিলাদের মাসে ১,৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়। নির্বাচনের আগে শিন্ডে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ফের ক্ষমতায় এলে এই প্রকল্পে ভাতা ১,৫০০ থেকে বাড়িয়ে ২,১০০ করা হবে। মহাজুটি জোটের (বিজেপি, শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে) এবং এনসিপি (অজিত পাওয়ার)) ইস্তেহারেও এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ভোটে জিতেছে মহাজুটি জোট। এনডিএ-র জয়ের পিছনে এই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই অনেকেই মনে করেছিলেন, নতুন সরকারের প্রথম বাজেটেই ‘লেড়কি বহিন’ প্রকল্পে ভাতা বাড়ানো হবে। কিন্তু তা তো হলোই না, উল্টে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ১০,০০০ কোটি টাকা কমিয়ে দেওয়া হল।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী অজিত পাওয়ার বলেন, ২০২৫-২৬ সালে ‘লেড়কি বহিন’ প্রকল্পের জন্য ৩৬,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা গত বর্ষে ছিল ৪৬,০০০ কোটি। প্রায় ২.৫৩ কোটি মহিলাকে আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী এই প্রকল্পটি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সরকারের মোট ৩৩,২৩২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
২০২৪-২৫ সালের শেষে রাজ্য সরকারের ঋণের পরিমাণ ৭,৮২,৯৯১ কোটি টাকায় পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হয়েছে বাজেটে। যা ২০২৩-২৪ সালের শেষে ছিল ৭,১১,২৭৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ বছরে ঋণ বেড়েছে ১০ শতাংশ।
বিরোধীরা এই বাজেটকে ‘জুমলার বাজেট’ বলে কটাক্ষ করেছেন। শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধব ঠাকরে বলেন, “এটি সম্পূর্ণ বোগাস বাজেট। তারা (মহাজুটি দলগুলি) সবকিছু নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু এই বাজেটে তার কোনওটিরই প্রতিফলিত হয়নি। এই বাজেট শুধুই প্রতিশ্রুতিতে পূর্ণ, ঠিক সরকারের মতোই। ‘লেড়কি বহিন’ প্রকল্পে ২,১০০ টাকা ভাতার প্রতিশ্রুতি এখনও অপূর্ণ। এটা স্পষ্ট যে তাদের সমস্ত প্রতিশ্রুতিই কেবল 'নির্বাচনী জুমলা' ছিল। এখন নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে। তাই এই সরকার কৃষক, যুব এবং মহিলাদের কল্যাণ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন