
করোনা সংক্রমণে নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য জম্মু ও কাশ্মীরে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এই লকডাউনের কারণে উপত্যকার খেটে-খাওয়া মানুষের জীবনধারণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। রিক্সাচালক, ট্যাক্সিচালক, শিকারা মালিক, হস্তশিল্প কর্মী, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের জীবনধারণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। কারুর কাছে যৎসামান্য সঞ্চয়, কারুর কাছে আবার কোনও সঞ্চয়ই সেই, এমন অবস্থায় ঘরে বসে যেতে হয়েছে তাদের।
এইসব শ্রমিকদের ভবিষ্যত এখন প্রায় অন্ধকারে। বছর ৫০-এর অটোচালক বিট্টু কুমার জম্মুর দুর্গানগর এলাকায় প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে খাবার ও টাকার জন্য ঘুরে বেরাচ্ছেন। লজ্জিত কুমার জানিয়েছেন, এমন কোনও দিন তাঁকে দেখতে হবে তা কোনওদিন ভাবেননি। বাড়িতে খাওয়ার মতো কিছু্ই নেই। অল্প কিছু সঞ্চয় ছিল, যা ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন লোকের দরজায় দরজায় ঘুরে সাহায্য চাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। এমনটা করতে খুবই লজ্জা করছে তাঁর। লোকের চোখের দিকে তাকাতেও পারছেন না তিনি। কিন্তু এছাড়া আর কোনও উপায়ও নেই।
রাজ্যের ট্রান্সপোর্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন -এর সভাপতি বিজয় সিং জানিয়েছেন, 'প্রায় ৭৫ হাজার যান চলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলজুড়ে। এর দ্বারা সহজেই অনুমান করা যায়, লকডাউনে কত মানুষ ভুক্তভোগী হচ্ছেন। চালকরা প্রতিবেশী, আত্মীয়দের কাছে সাহায্য চাইতে যাচ্ছেন।কিন্তু এভঅবে আর কতদিন চলবে? আমরা কোভিড-১৯- থেকে বেঁচে যাবো, কিন্তু দারিদ্রে প্রাণ হারাবো।' তিনি আরও জানান, কোভিডের কারণে মানুষকে বাঁচাতে লকডাউন করেছে সরকার। কিন্তু গরিব মানুষ কীভাবে দিন চালাবে তাও ভাবা দরকার সরকারের।
শিকারা ইউনিয়নের সভাপতি ওয়ালি মহম্মদ জানিয়েছেন, ৪ হাজার ৭৮১ টি শিকারা রয়েছে। যেগুলো এখন আপাতত বন্ধ পড়ে রয়েছে। এইসব শিকারার মালিকরা এখন বাড়িতেই রয়েছেন। কিন্তু লকডাউন যদি এভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে তাঁদেরও ভিক্ষা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই।মহম্মদ বলেন, দিল্লি সরকার ইতিমধ্যে চালকদের জন্য ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে। শিকারা চালকদের জন্যও এরকম সাহায্যের ব্যবস্থা করা হোক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন