বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ঝাড়খণ্ড! চার মাসে প্রাণহানি অন্তত ৪৫৮ জনের, জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল আইএমডি

People's Reporter: পরিসংখ্যান অনুসারে, সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন বজ্রাঘাতে, ১৮৬ জন। ডুবে মারা গিয়েছেন আরও ১৭৮ জন।
বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ঝাড়খণ্ড! চার মাসে প্রাণহানি অন্তত ৪৫৮ জনের, জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল আইএমডি
ছবি - সংগৃহীত
Published on

চলতি মরশুমে ভয়াবহ বৃষ্টির সম্মুখীন হয়েছে ঝাড়খণ্ড। জুন থেকে সেপ্টেম্বর - গত চার মাসের টানা বৃষ্টিতে প্রায় তছনছ হয়ে গেছে গোটা রাজ্য। সরকারি তথ্য বলছে, প্রবল বর্ষণে এবং সংশ্লিষ্ট দুর্যোগে অন্তত ৪৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। নষ্ট হয়েছে কৃষিজমি।

বিভিন্ন রাজ্য দপ্তর থেকে সংগৃহীত পরিসংখ্যান অনুসারে, সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন বজ্রাঘাতে, ১৮৬ জন। ডুবে মারা গিয়েছেন আরও ১৭৮ জন। বাকি মৃত্যুগুলি ঘটেছে বন্যা, ভূমিধস এবং বাড়ি ভেঙে পড়া সংক্রান্ত ঘটনায়।

বর্ষার তাণ্ডবে রাজ্যজুড়ে অন্তত ৪৬৭টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা ৮,০০০ ছাড়িয়েছে। প্রায় ২,৩৯০ হেক্টর কৃষিজমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। যার মধ্যে রাঁচি, গুমলা, লোহরদাগা এবং সিমদেগা জেলার পরিস্থিতি সবচেয়ে শোচনীয়। শুধুমাত্র সাহেবগঞ্জেই গঙ্গার জলস্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রায় ২০,০০০ মানুষকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে।

রাঁচি আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর অভিষেক আনন্দ বলেন, “১ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঝাড়খণ্ডে ১,১৯৯.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি। গত দশ বছরে এটি সর্বাধিক। এর আগে ২০১৬ সালে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছিল ১,১০১.৮ মিলিমিটার।”

আনন্দের মতে, এই অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের মূল কারণ জলবায়ু পরিবর্তন এবং বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি। তিনি বলেছেন, “এই মৌসুমে বঙ্গোপসাগর অস্বাভাবিকভাবে সক্রিয় ছিল। একের পর এক নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে আসে, যার ফলে টানা ভারী বৃষ্টি হয়।"

জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে পূর্ব সিংভূমে (১,৬৬৯.৫ মিমি), তার পরেই সেরাইকেলা-খরসওয়ানে (১,৫২৬.৩ মিমি) এবং রাঁচিতে (১,৫৫০.২ মিমি)। প্রতিটি জেলাতেই স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দীপাবলি ও ছট পুজোর সময় রাজ্যে থাকবে ‘পিঙ্ক কোল্ড’! অর্থাৎ হালকা ঠান্ডা, তবে পরে শীতের প্রকোপ বাড়তে পারে। আনন্দ ব্যাখ্যা করেছেন, “লা নিনা, বাতাসের দিক পরিবর্তন এবং হিমালয়ে তুষারপাতের উপর নির্ভর করবে এ বছরের শীতের তীব্রতা।"

বৃষ্টিপাতের হার কমতে শুরু করলেও, আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যের কিছু এলাকায় মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। কিছু জায়গায় বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমডি। এর পরে রাজ্যে ফিরবে শুষ্ক আবহাওয়া।

বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ঝাড়খণ্ড! চার মাসে প্রাণহানি অন্তত ৪৫৮ জনের, জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল আইএমডি
Jammu & Kashmir: কাশ্মীরে অকাল তুষারপাত! বরফে ঢেকে পর্যটনকেন্দ্রগুলি, বন্ধ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়ক

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in