চীনের সঙ্গে সামরিক আলোচনা আবারও ব্যর্থ! এখনও ভারতীয় সেনাকে টহল দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে : কংগ্রেস

২০২০ সালের এপ্রিল মাসের পর থেকে গত তিনবছর তিনমাস ধরে সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফেরানো যায়নি।
চীনের সঙ্গে সামরিক আলোচনা আবারও ব্যর্থ! এখনও ভারতীয় সেনাকে টহল দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে : কংগ্রেস
ছবি - প্রতীকী

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে আরও একবার ব্যর্থ হল ভারতীয় সেনার সামরিক আলোচনা। পূর্ব লাদাখ অঞ্চলের ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার ও দুই দেশের সীমান্তে শান্তি ও স্থিরতা ফেরাতে গত ১৩ ও ১৪ আগস্ট ভারত-চীন সেনার ১৯তম সামরিক আলোচনার চেষ্টাও কার্যত বিফলে গিয়েছে। সেই নিয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা টুইটারে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কার্যত তুলোধোনা করেছেন। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিক প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি।

গত প্রায় ৩ বছর ধরে পূর্ব লাদাখের LAC বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মোতায়েন দুই দেশের সেনার মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তি চলছেই। এই নিয়ে এর আগেও ১৮ বার দুই দেশের মধ্যে বৈঠক বসেছিল। সেইসব বৈঠকের পর ওই অঞ্চলের গালওয়ান উপত্যকা, প্যাংগং হ্রদ, হটস্প্রিং ও গোগরা পয়েন্ট থেকে দুই দেশই তাঁদের সেনা সরিয়ে নেয়। কিন্তু এখনও ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রায় কয়েক হাজার চীনা রয়েছে বলে ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর। তাই এবারের আলোচনা ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৯তম ইন্দো-চীন সামরিক বৈঠকেও সুফল মিলল না।

এই নিয়ে কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ সুরজেওয়ালা মোদী সরকারের তীব্র নিন্দা করে টুইটারে লিখেছেন, “চীনের সঙ্গে ১৯তম আলোচনাও ব্যর্থ হল। গত তিনবছর ধরে প্রত্যেকটি আলোচনাই ব্যর্থ হয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের পর থেকে গত তিনবছর তিনমাস ধরে সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফেরানো যায়নি।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, “ভারতীয় সেনাবাহিনী উত্তর লাদাখের দৌলত বাগ ওল্ডির কাছে ডেপসাং সমতল ভূমির কাছে এবং ডেমচকের কাছে সিএনএন জংশনের ৬৫টি টহলদারি পয়েন্টের মধ্যে ২৬টি পয়েন্টে টহলদারি চালাতে পারে না। চীনা সেনারা এখনও আমাদের ভূখণ্ডের মধ্যে ‘বটলনেক’ নামক ওয়াই জংশনে ভারতীয় সেনাদের বাধা দিচ্ছে। টহলদারির জন্য চীনা সেনার তরফে ১০, ১১, ১১এ, ১২, ১৩ নং পেট্রোলিং পয়েন্টে এখনও ভারতীয় সেনাকে টহল দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।”

বুধবার সাত-সকালের পোস্টে সুরজেওয়ালা মোদী সরকারের দিকে বেশ কয়েকটি তীক্ষ্ণ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, “চীনাদের তরফে অবৈধভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকৃত অঞ্চল কবে খালি করা হবে? কবে চীনা সেনাদের পিছু হটাবে ভারত? চীনারা ভারতের যে ১০০০ বর্গকিলোমিটার জমি দখল করেছে, সেখানে নরেন্দ্র মোদী সরকার কি কোনও বিশেষ সমঝোতা করেছে? ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে পর থেকে যে শান্তি ও স্থিরতা কায়েম করা যায়নি, কবে চীনকে রক্তচক্ষু দেখিয়ে সেই শান্তি ও স্থিরতা ফেরাবে ভারত? ২০২০ সালের একটি সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, ‘ভারতের সীমান্তের মধ্যে অন্য কেউ প্রবেশ করেনি’। পিএম মোদী কি এখনও সেই কথায় একমত? নাকি উনি শুধুই জাতিকে ভুল পথে চালিত করার জন্য বলেছিলেন ওই কথা?”

কং নেতার দাবি, “যদি কেউ ভারতের সীমান্তে প্রবেশ নাইই করে থাকে, তাহলে চীনের সঙ্গে কী নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকে বসছে ভারত? ভারতমাতাকে রক্ষা করা ছাড়িয়ে অন্য কিছু কবে করবে মোদী সরকার?”

তবে দেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, “পশ্চিম সেক্টরের LAC সংলগ্ন এলাকার সমস্যাগুলির সমাধান নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক ও গভীর আলোচনা হয়েছে। দুই পক্ষই শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে খোলামেলাভাবে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত বিনিময় করেছে।”

চীনের সঙ্গে সামরিক আলোচনা আবারও ব্যর্থ! এখনও ভারতীয় সেনাকে টহল দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে : কংগ্রেস
‘NewsClick’-র বিরুদ্ধে সরকারের মিডিয়া ট্রায়াল! ‘গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ’ - মুখ খুললেন বিশিষ্টজনেরা

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in