

গত দশ বছরে কর্পোরেট অনাদায়ী ঋণ মকুব করা হয়েছে ১৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। তার মধ্যে চলতি বছরে ২.১ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করা হয়েছে। রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট-এর অধীনে করা এক প্রশ্নের জবাবে সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।
এই তথ্য প্রকাশের পর ফের মোদী জমানায় সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের একাধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ট্যুইটারে মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি লিখেছেন, “মোদীর নেতৃত্বে কর্পোরেট-সাম্প্রদায়িক আঁতাত গোষ্ঠীরা ব্যাঙ্কে জনগণের সঞ্চয়ের টাকা লুঠ করছে। এই মোদী সরকারের অবিলম্বে অপসারিত হওয়া দরকার।”
সম্প্রতি গত দশ বছরে মকুব হওয়া কর্পোরেটদের ঋণের হিসাব দিয়ে একটি তথ্য প্রকাশ করেছে আরবিআই। রিপোর্ট অনুসারে, ২০১২-১৩ অর্থবর্ষ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ পর্যন্ত মোট দশ বছরে কর্পোরেটদের বিশাল পরিমাণ ঋণ মকুব করেছে সরকার। প্রতিবছরই মকুব হওয়া ঋণের পরিমাণ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হিসাব বলছে, গত দশ বছরে কর্পোরেটদের মোট ১৫.৩২ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে অর্থমন্ত্রক। চলতি বছরেও এখনও পর্যন্ত ২.১৪ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করা হয়েছে।
তবে কেন্দ্রের দাবি, অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ কমে হয়েছে ৩.৯ শতাংশ। যদিও যে পরিমাণ অনাদায়ী ঋণ মকুব হয়ে গিয়েছে তার হিসেব কেন্দ্র এড়িয়ে গিয়েছে এবং সেই হিসেব জুড়লে এবছর অনাদায়ী ঋণের হার বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭.৪৭ শতাংশ। যা কেন্দ্রের দাবি করা ঋণ শতাংশের প্রায় আড়াই শতাংশ।
সোমবার এই নিয়ে টুইটারে মোদী সরকারকে তুলোধোনা করেন ইয়েচুরি। তিনি লিখেছেন, “চলতি অর্থবর্ষে আবার ২.১৪ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করা হল। ২০১৪ সাল থেকে এই পর্যন্ত মোট ১৫.৩২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মকুব করা হল।”
তিনি আরও জানান, “মোদীর জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে যে, ঋণ মকুব করা মানে ঋণ মকুব নয়। কিন্তু এইসব দাবি উড়িয়ে দিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলেছে যে, গত তিন বছরে অনাদায়ী মকুব হওয়া ঋণের মাত্র ১৮.৬ শতাংশ আদায় করা হয়েছে। অর্থাৎ মানুষ তাঁদের কষ্টার্জিত সঞ্চয় হারালে তাঁদের ঋণ নিতে বলা হচ্ছে। কিন্তু কর্পোরেটদের ঋণ মুকুবের নামে দেশে অবাধে লুঠ করার অনুমতি দিচ্ছে সরকার।”
শুধু ঋণ মকুবই নয়, কর্পোরেটদের অনাদায়ী ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রেও যেন খুব বেশি জোরাজুরি না করা হয়, সেদিকেও বিশেষ নজর রাখার কথা জানিয়েছেন স্বয়ং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। মঙ্গলবার সংসদে তিনি জানিয়ছেন, “ব্যাঙ্কগুলিকে আমরা জানিয়েছি, ঋণ আদায়ের বিষয়টি যেন তারা একটি সহানুভুতি নিয়ে দেখে।”
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন