
ব্যাঙ্কে টাকা রাখা সবথেকে নিরাপদ। এই বিশ্বাসেই বেশিরভাগ মানুষ তাঁদের নিজেদের পুঁজি ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখেন। কিন্তু এবার সেই ব্যাঙ্কেই জলিয়াতির ঘটনা ঘটল। ব্যাঙ্কেরই এক শীর্ষ আধিকারিক গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করে চার কোটি টাকারও বেশি প্রতারণা করেছেন। বুধবার গভীর রাতে বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ওই ব্যাঙ্ক আধিকারিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে আদালতে পেশ করার পর তিনি আপাতত জেল হেফাজতে আছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে।
রাজস্থানের কোটার আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক শ্রীরাম নগর শাখার রিলেশনশিপ ম্যানেজার ছিলেন সাক্ষী গুপ্তা। অভিযোগ, ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৪১ জন গ্রাহকের ১১০টি অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি ৪.৫৮ কোটি টাকা অবৈধভাবে তুলে নিয়েছেন। এমনকি গ্রাহকেরা যাতে লেনদেন সম্পর্কে কিছু জানতে না পারে, সেকারণে তিনি ফোন নম্বরগুলোও বদলে দিয়েছিলেন।
দুই বছর ধরে এভাবে জালিয়াতি চলতে থাকলেও ব্যাঙ্কের কেউই এ সম্পর্কে কোনও ধারণা করতে পারেননি। এই খবর প্রকাশ্যে আসে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি। এক গ্রাহক এফডি সম্পর্কে ব্যাঙ্কে খোঁজ নিতে এসে গরমিল দেখে বিষয়টি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। এরপর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
তদন্তকারী অফিসার ইব্রাহিম খান জানিয়েছেন, "ওই ব্যাঙ্ক আধিকারিক তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফোন নম্বরগুলি এই অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করে চার কোটিরও বেশি টাকা তুলে নেন। এমনকি তিনি এমন একটি সিস্টেম তৈরি করেন যার মাধ্যমে তিনি তাঁর সিস্টেমে ওটিপি পেতেন এবং অ্যাকাউন্টধারীরা জালিয়াতির কোনও আভাস পেতেন না"।
তদন্তে জানা গেছে, ওই মহিলা শেয়ার বাজারে টাকা বিনিয়োগ করতেন। ওই অ্যাকাউন্ট গুলি থেকে টাকা তুলেই সেই বিনিয়োগ চালাতেন। তবে শেয়ার বাজারে ক্ষতির মুখে পড়ায় ওই টাকা আর ফেরত দিতে পারেননি।
এই প্রসঙ্গে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গ্রাহকদের স্বার্থই আমাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতারণামূলক কার্যকলাপ নজরে আসার পরেই আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করি এবং ওই কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। আমরা আশ্বস্ত করতে চাই যে এই ঘটনায় যারা যার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের সকলের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন