
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য এক সরকারি আধিকারিককে বরখাস্ত করল কর্ণাটক সরকার। প্রকাশ্যে আরএসএস-এর কার্যকলাপে নিষেধাজ্ঞা জারি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়ার একদিন পরেই এই ঘটনা ঘটেছে। কংগ্রেস সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে বিজেপি। একে কংগ্রেসের "বিকৃত এবং হিন্দু-বিরোধী মানসিকতা" বলে উল্লেখ করেছে গেরুয়া শিবির।
রায়চুর জেলার সিরওয়ার তালুকের পঞ্চায়েত ডেভেলপমেন্ট অফিসার প্রবীণ কুমার কেপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি গ্রামীণ উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত রাজ (আরডিপিআর) ডিপার্টমেন্টে কর্মরত ছিলেন।
গত ১২ অক্টোবর লিংসুগুরে আরএসএস-এর নির্দিষ্ট পোশাক পরে (সাদা জামা, খাকি প্যান্ট, মাথায় বিশেষ ধরণের টুপি এবং লাঠি হাতে) তাদের মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন প্রবীণ কুমার।
মিঃ কুমার কর্ণাটক সিভিল সার্ভিস (আচরণ) বিধি, ২০২১-এর ৩ নম্বর নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন, যেখানে সরকারি কর্মচারীদের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা, সততা এবং তাদের অফিসের উপযুক্ত আচরণ বজায় রাখার উল্লেখ রয়েছে।
আইএএস অফিসার অরুন্ধতী চন্দ্রশেখরের জারি করা বরখাস্ত-আদেশে বলা হয়েছে, মিঃ কুমারের আচরণ রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা এবং শৃঙ্খলার জন্য প্রয়োজনীয় সিভিল সার্ভিস আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছে। তার কর্মকাণ্ড একজন সরকারি কর্মচারীর কাছ থেকে প্রত্যাশিত মানদণ্ডের সাথেও অসঙ্গতিপূর্ণ। এই ঘটনার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিদ্দারামাইয়া সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি। কর্ণাটক বিজেপি প্রধান বিজয়েন্দ্র ইয়েদুরিয়াপ্পা বলেন, “এটা কর্ণাটক কংগ্রেসের বিদ্বেষপূর্ণ এবং হিন্দু-বিরোধী মানসিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। গভর্নমেন্ট মেশিনারির অপব্যবহার শুরু করেছেন আপনারা। তবে আমরা এটিকে আবার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার কৌশল জানি। এই সাস্পেনশন অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং এই পদক্ষেপের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় এই বিভাজনমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমেই সাংবিধানিক উপায়ে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।“
সম্প্রতি কর্ণাটক মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রকাশ্যে বা সরকারি স্থানে কোনও সংগঠন কর্মসূচী করতে চাইলে সরকারের কাছ থেকে পূর্বানুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। রাজ্যের মন্ত্রী প্রিয়ঙ্ক খাড়গে প্রকাশ্যে বা সরকারি স্থানে আরএসএস-এর কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে চিঠি দিয়েছিলেন। তারপরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে তখন থেকেই কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে বিরোধ চলছে। মিঃ কুমারের বহিষ্কার সেই বিরোধে নতুন রশদ যুগিয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন