

সহিংসতার জেরে উত্তপ্ত উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানি। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী কমপক্ষে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
আইএএনএস সূত্র জানিয়েছে, নিহতরা হলেন, আরিস, ফাহিম, জনি ও তার ছেলে আনাস। এই মুহূর্তে শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে এই কারফিউ।
স্থানীয় সূত্র মারফত জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন হলদওয়ানির বনভুলপুরায় সরকারি জমিতে বেআইনিভাবে নির্মিত একটি মাদ্রাসা ও একটি মসজিদ সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ভাঙতে যায়। এর প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা।
জানা গেছে, মসজিদ এবং মাদ্রাসা ভাঙার আগে অফিসাররা কেবলমাত্র দু’জন স্থানীয়কে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিলেন ধর্মীয় বইগুলি সরিয়ে নেওয়ার জন্য। স্থানীয়রা মাদ্রাসা ভাঙার আদেশপত্র দেখতে চাইলে, তা দেখাতে অস্বীকার করেন সরকারি আধিকারিকরা।
স্থানীয়দের প্রতিবাদ সত্ত্বেও প্রশাসন বলপূর্বক বুলডোজার চালাতে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী নিউজ পোর্টাল দ্য ওয়্যারকে বলেন, “পুলিশ আমাদের উপর গুলি চালিয়েছে। অন্তত চারজন পুরুষ ওই এলাকায় গুলিতে আহত হয়েছে। আমাদের মেয়েদের উপর লাঠিচার্জ করেছেন পুরুষ পুলিশ কর্মকর্তারা।“
অন্যদিকে পুলিশের দাবি, উন্মত্ত জনতা তাদের উপর এবং সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। একটি জেসিবি মেশিন ও ৭০ টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এলাকায় কারফিউ এবং দেখা মাত্র গুলি করার (shoot-at-sight order) নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এই বিষয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
প্রশাসন দ্বারা ভেঙে দেওয়া এই মাদ্রাসাটি রেলওয়ে কলোনি এলাকায় অবস্থিত যেখানে ৪ হাজারেরও বেশি পরিবার গত ৪০ বছর ধরে বাস করছে। রেলপথ সম্প্রসারণের জন্য এই এলাকার জমি প্রয়োজন কেন্দ্র সরকারের। রেলের তরফ থেকে বাসিন্দাদের একাধিকবার উচ্ছেদ নোটিস ধরালেও স্থানীয়রা জায়গা ছাড়ছেন না। রেলের এই নোটিসের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা আগেও প্রতিবাদ মিছিল করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের হয়ে শীর্ষ আদালতে বিষয়টি দেখছেন সিনিয়র আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। বিষয়টি এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন