আদৌ কি পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর আবহে দলে দলে মানুষ বাংলাদেশ পালাচ্ছেন? বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ওঠা এই দাবি কি আদৌ সত্যি? সেখানে এই সংক্রান্ত যেসব ভিডিও পোষ্ট করা হচ্ছে তার বাস্তব ভিত্তি কতটা? সোশ্যাল মিডিয়ায় সাম্প্রতিক কিছু পোষ্টের নিরিখে এই বিষয়ে ফ্যাক্ট চেক করেছিল অলট নিউজ ডট ইন। যে বিশ্লেষণ থেকে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অলট নিউজ তাদের প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, তত্বম এএসআই নামক এক এক্স হ্যান্ডেল ইউজার গত ১১ নভেম্বর নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন ট্যুইটার) এক ভিডিও পোষ্ট করে। যেখানে দাবি করা হয় পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর ঘোষণার পরেই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা ‘ঘর বাপসি’ করছে। এই ভিডিও দেখেন প্রায় ১ লক্ষ নেট ইউজার।
প্রায় একই বয়ানে এই একই ভিডিও পোষ্ট করেন রীতিকা, ওশান জৈন, আদিত্য কৃষ্ণ গিরি সহ অনেকেই। যে সব পোষ্টের কোনোটার ভিউ হয়েছে ২৮ হাজার আবার কোনটার সাড়ে চার লাখের বেশি।
কিন্তু অলট নিউজের ‘ফ্যাক্ট চেক’ থেকে উঠে এসেছে সম্পূর্ণ অন্য তথ্য। ওই প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বাংলাদেশের ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন’ নামক এক সংবাদমাধ্যমের পোষ্ট থেকে ওই ভিডিও নেওয়া। ছবিটি যে জায়গার সেটি বাংলাদেশের খুলনার। বাগেরহাট জেলার মঙ্গলা উপজেলায় মঙ্গলা নদীর তীরে। যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ফেরিঘাটের যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে। যে অস্থায়ী ঘাট দিয়ে প্রতিদিন বহু মানুষ ফেরি পারাপার করেন। যা ওই অঞ্চলের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। ভিডিওতে বলা আছে, “মোংলা নদী পারাপারে ঝুঁকিপূর্ণ ঘাট ব্যবহার করে যাতায়াত করছেন প্রায় দুই লাখ যাত্রী। পুরনো ঘাটটি নষ্ট হওয়ার পর থেকে কাঠের ঝুঁকিপূর্ণ ঘাটটিই একমাত্র ভরসা স্থানীয়দের। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বড় ধরনের প্রাণহানিরও রয়েছে শঙ্কা। দুর্ভোগ কমাতে আলাদা টেকসই ঘাট নির্মাণের দাবি যাত্রীদের।”
প্রতিবেদন অনুসারে প্রতিদিন প্রায় দু’লক্ষ মানুষ ওখান দিয়ে যাতায়াত করেন। এই ভিডিও ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন’-এর ইউটিউব চ্যানেলে আছে। গত ১১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ওই ভিডিও আপলোড করেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন।
অলট নিউজ একাধিক ছবির মাধ্যমে এই ভিডিওর বিশ্লেষণ করেছে এবং জানিয়েছে, বিশ্লেষণের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এসআইআর-এর পর পশ্চিমবঙ্গ থেকে দলে দলে মানুষ পালানোর যে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে তা আসলে বাংলাদেশের খুলনা জেলার এক ভিডিও। তাই সম্প্রতি প্রকাশিত ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যে দাবি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুয়ো।
(অলট নিউজ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে লিখিত। এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত সমস্ত তথ্য, ছবি অলট নিউজ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে সংগৃহীত)
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন