
র্যাগিংয়ের নামে ভয়ঙ্কর নৃশংসতা। পোশাক খুলিয়ে মারধর, যৌনাঙ্গে ডাম্বেল ঝুলিয়ে রাখা। এখানেই শেষ নয়, জ্যামিতি বক্স থেকে কম্পাস নিয়ে গেঁথে দেওয়া হত ছাত্রদের শরীরে। মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হত দিনের পর দিন। সে সব মুহূর্তের ভিডিয়োও ধরে রাখা হত ক্যামেরায়। শেষমেষ অভিযোগ দায়ের করেন কলেজের নবাগত ছাত্ররা। এরপরেই তৃতীয় বর্ষের পাঁচ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে কেরালার কোট্টায়ামের এক সরকারি নার্সিং কলেজে। গত বছর নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয় র্যাগিংয়ের নামে এই ভয়ঙ্কর অত্যাচার। ধারালো অস্ত্র শরীরে ফুটিয়ে দেওয়া, মারধর করা এমনকি ঘন্টার পর ঘন্টা নগ্ন করে দাঁড় করিয়ে রাখা হত। পুরুষাঙ্গে ডাম্বেল বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হত। এমনকি কাটা জায়গায় এমন লোশন লাগিয়ে দেওয়া হত, যাতে আরও জ্বালা করে। চিৎকার করলে মুখে ঢেলে দেওয়া হত ওই লোশন। কলেজের নবাগতদের উপর সিনিয়র ছাত্ররা এমন ভাবেই অত্যাচার করত।
এই সমস্ত র্যাগিংয়ের ভিডিও রেকর্ড করে রাখত অভিযুক্তরা। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ব্ল্যাকমেল করত ওই ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে। তিন মাস সহ্য করার পর, অবশেষে এক ছাত্র এই অত্যাচারের কথা জানায় তাঁর বাবাকে। এরপর ওই ছাত্রের বাবার সহায়তায় প্রথম বর্ষের তিন পড়ুয়া পুলিশে অভিযোগ জানায়। অভিযোগ, সিনিয়ররা জুনিয়রদের কাছ থেকে মদ কেনার জন্য টাকা তুলত। যারা টাকা দিতে অস্বীকার করত, তাদের উপর এহেন অত্যাচার করা হত।
অভিযোগ পাওয়ার পরই তৃতীয় বর্ষের পাঁচ ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অ্যান্টি-র্যাগিংয়ের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে তারা পুলিশ হেফাজতে। ধৃত সকলেই তিরুবনন্তপুরমের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। বুধবার বিকেলে তাদের আদালতে তোলা হবে বলে জানা যাচ্ছে। ওই ছাত্রদের কলেজ থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত বছরের শেষে র্যাগিং-এর জেরে গুজরাতের এক মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। তার আগের বছর কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও র্যাগিংয়ের জেরে মৃত্যু হয়েছিল প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন