Bihar: সাংবাদিক খুন-মামলায় আদালতে হাজির 'মৃত’ সাক্ষী, শো-কজ সিবিআইকে

২০১৬ সালের ১৩ মে, বিহারের সিওয়ান স্টেশন রোডে একদল দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন হিন্দি পত্রিকার সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জন। এই ঘটনার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন ৮০ বছরের বৃদ্ধা বাদামী দেবী।
মৃত সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জন (ডানে)
মৃত সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জন (ডানে)গ্রাফিক্স - নিজস্ব

ছ’বছর আগের একটি পুরানো মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন ‘মৃত’ সাক্ষী। শুক্রবার, সশরীরে হাজির হয়ে নিজের পরিচয়পত্র জমা দিয়েছে তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের সিওয়ান জেলায়। আর ওই সাক্ষীর ‘ভুয়ো মৃত্যুর রিপোর্ট’ পেশ করার দায়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)-কে শোকজ করেছে আদালত।

ঘটনাটি আসলে কি?

২০১৬ সালের ১৩ মে, বিহারের সিওয়ান স্টেশন রোডে একদল দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন হিন্দি পত্রিকার সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জন (Rajdeo Ranjan)। এই ঘটনার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন ৮০ বছরের বৃদ্ধা বাদামী দেবী (Badami Devi)। ২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর, এই খুনের মামলায় বিহার সরকারের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। দীর্ঘ ছয় বছর পর গত ২৪ মে, মুজাফফরপুর আদালতে তদন্তের একটি রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই। তাতে এই মামলার অন্যতম সাক্ষী বাদামী দেবীকে ‘মৃত’ হিসাবে দেখানো হয়।

তবে, সকলকে চমক দিয়ে শুক্রবার আদালতে সশরীরে হজির হন সিবিআইয়ের খাতায় থাকা ‘মৃত’ বাদামী দেবী। বিচারক পুনীত কুমার গর্গের সামনে হাজির হয়ে জানান যে, তিনি জীবিত রয়েছেন। আর এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সিবিআইকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে আদালত।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে বাদামী দেবী বলেন, 'যখন আমি জানতে পারি যে সিবিআই আদালতে আমার মৃত্যুর রিপোর্ট দাখিল করেছে, আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এটি আমার জন্য হতাশাজনক এবং বেদনাদায়ক ছিল। তারপর আমি ভোটার পরিচয়পত্র, প্যান কার্ড এবং আধার কার্ড নিয়ে আদালতে হাজির হয়েছিলাম।'

৮০ বছরের ওই বৃদ্ধার আইনজীবী শরদ সিনহা বলেন, "রাজদেও রঞ্জনের হত্যাকাণ্ডে প্রয়াত সাংসদ মহম্মদ শাহাবুদ্দিন সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। এফআইআর অনুসারে, শাহাবুদ্দিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী লাদন মিয়ানকে রাজদেও রঞ্জনকে হত্যার সুপারি দেওয়া হয়েছিল।

আইনজীবী আরও জানান, 'অভিযুক্তরা বাদামী দেবীর বাড়িতে নজর রাখছিল। তারা জোরপূর্বক তাঁর সম্পত্তি দখল করতে চেয়েছিল। রাজদেও রঞ্জন সাংবাদিক হিসেবে হিন্দি সংবাদপত্রের মাধ্যমে এই বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। তিনি সিওয়ানের সেই পত্রিকার ব্যুরো চিফ ছিলেন। অভিযুক্তরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল এবং ২০১৬ সালের ১৩ মে সিওয়ান স্টেশন রোডে তাঁকে হত্যা করেছিল।'

শরদ সিনহা বলেন, 'বাদামী দেবী এই মামলার মূল সাক্ষী। সিবিআই যাচাই না করেই আদালতে তাঁর মৃত্যুর রিপোর্ট পেশ করেছে। এটি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করার একটি স্পষ্ট এবং গভীর ষড়যন্ত্র। একটি মিথ্যা মৃত্যুর রিপোর্ট। বাদামী দেবীর উপস্থিতির পরে আদালত সিবিআইকে তিরস্কার করেছে। সিবিআইকে কারণ দর্শানোর নোটিশও জারি করেছে। তদন্তে জড়িত সিবিআই-র সমস্ত অফিসারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।'

একইসঙ্গে সিবিআইয়ের খাতায় 'মৃত' বাদামী দেবীর আইনজীবী জানান, 'আমি আদালতে জানিয়েছি যে, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার সহ সাধারণ মানুষ, সিবিআই-য়ের উপর বিশ্বাস রাখেন। কিন্তু তারাই এমন একটি জগাখিচুড়ি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে এবং একজন জীবিত মহিলাকে মৃত বলে ঘোষণা করেছে, যেখানে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার অন্যতম প্রধান সাক্ষী।'

মৃত সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জন (ডানে)
Karti Chidambaram: কার্তি চিদম্বরমের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ CBI আদালতে

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in