
স্কুলের খেলার মাঠে ক্রিকেট খেলছিলেন একদল উচ্চবর্ণের ছেলে। সে সময় দলিত সম্প্রদায়ের এক কিশোর ক্রিকেট বলে হাত দেওয়ায়, তাঁর জাতপাত তুলে গালিগালাজ করেন উচ্চবর্ণের এক ব্যক্তি। আর, তা দেখে প্রতিবাদ করেন দলিত কিশোরের কাকা। এই ‘অপরাধে’ তরবারি দিয়ে কাকার বুড়ো আঙুল কেটে নিয়েছেন উচ্চ-বর্ণের মানুষেরা। রবিবার, এমনই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে গুজরাটের পাটান জেলার কাকোশি গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে খবর, খেলা চলাকালীন এক বার ক্রিকেট বলে হাত দেয় ওই দলিত কিশোর। তাতে অভিযুক্তেরা রেগে যান। জাতপাত তুলে উল্টোপাল্টা কথা বলেন তাঁরা। ঘটনার প্রতিবাদ করেন কিশোরের কাকা ধীরাজ পারমা। কিছু মানুষের হস্তক্ষেপে তখনকার মতো বিষয়টি মিটে যায়।
পরে, রবিবার সন্ধায় ধীরজের বাড়িতে চড়াও হন অভিযুক্তেরা। ধীরজ এবং তাঁর ভাই কীর্তি পারমাকে হুমকি দেয় তাঁরা। এখানেই থেমে না থেকে, তরবারি দিয়ে কীর্তির আঙুল কেটে দেওয়া হয়। এরপর, গুরুতর অবস্থায় কীর্তি পারমারকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কীর্তিকে পালানপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখান থেকে তাঁকে আহমেদাবাদের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এখন তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।
এদিকে, সাংবাদিকদের কাছে পুরো ঘটনার কথা তুলে ধরেন নিগৃহীত ধীরাজ পারমা। তিনি জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সিদ্ধপুর তালুকের কাকোশি থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার নথিভুক্ত FIR-এ ছয় অভিযুক্তের নাম উল্লেখ করা হয়েছে - কুলদীপ সিং রাজপুত, সিদ্ধরাজ সিং, রাজু ওরফে রাজদীপ দরবার, যশবন্ত সিং রাজপুত, চাকুবা লক্ষ্মণজি এবং মহেন্দ্র সিং এবং একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি। তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা, স্বেচ্ছায় বিপজ্জনক অস্ত্র দিয়ে আঘাত এবং হিংসা আইনের একাধিক ধারার FIR দায়ের করা হয়েছে।
FIR-এ বলা হয়েছে, রবিবার, সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার সময় ধীরজ এবং তাঁর ভাই কীর্তি পারমাকে তলোয়ার ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করে অভিযুক্ত কুলদীপ-সহ ছয় ব্যক্তি। সেসময় কীর্তির বাম হাতের বুড়ো আঙুল কেটে অজ্ঞান করে দেয় অভিযুক্তেরা।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।