
একের পর এক গাছ কেটে ফেলা মানুষ খুনের থেকেও বড় অপরাধ। মঙ্গলবার এক মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। পাশাপাশি, ওই মামলায় অভিযুক্তকে প্রতিটি গাছ বাবদ এক লক্ষ টাকা করে জরিমানাও করেছে বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ।
আগ্রার তাজমহলের কাছে প্রায় ১০ হাজার স্কোয়্যার কিমি অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত রয়েছে তাজ ট্র্যাপিজিয়াম জোন। সেখানে ৪৫৪ টি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে ছিল এই মামলার শুনানি। শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ বলে, "পরিবেশের মামলায় কোনও ক্ষমা নেই। এই বিপুল সংখ্যক গাছ কাটা একজন মানুষকে হত্যা করার চেয়েও বড় অপরাধ। ওই ৪৫৪ টি গাছ থেকে পরিবেশের যে উপকার হত তা পুনরুদ্ধার করতে আরও ১০০ বছর সময় লেগে যাবে।" বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, গাছগুলি কাটার সময় কারও অনুমতির তোয়াক্কা করেননি অভিযুক্ত।
ওই সংক্রান্ত মামলার প্রেক্ষিতে সেন্ট্রাল এমপাওয়ার্ড কমিটি বা সিইসির রিপোর্ট গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই রিপোর্টে মথুরা-বৃন্দাবনে ডালমিয়া ফার্মসে ৪৫৪ টি কাটার জন্য অভিযুক্ত শিবশঙ্কর আগরওয়ালকে প্রতিটি গাছের জন্য এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই রিপোর্টই নির্দেশ আকারে শুনিয়েছে আদালত। এই ৪৫৪টি গাছের মধ্যে ৪২২টি গাছ বৃন্দাবন চাটিকারা রোডে অবস্থিত ডালমিয়া ফার্ম নামে পরিচিত ব্যক্তিগত জমিতে ছিল এবং বাকি ৩২টি গাছ এই ব্যক্তিগত জমি সংলগ্ন রাস্তার ধারে ছিল যা একটি সংরক্ষিত বন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তাজ ট্র্যাপিজিয়াম জোনের মধ্যে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি এবং জঙ্গল নয় এমন জায়গায় গাছ কাটার জন্য অনুমতি নিতে হবে।
অভিযুক্তের আইনজীবী মুকুল রোহতগি শীর্ষ আদালতে তাঁর মক্কেলের ভুল মেনে নিয়েছেন। তবে এত টাকা জরিমানা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়, টাকার পরিমাণ কমানোর আবেদন জানিয়েছেন তিনি। যদিও সেই আবেদন খারিজ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ, ওই অঞ্চলে গাছ লাগাতে হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনের নিষ্পত্তি হবে সকল পক্ষের সম্মতিতে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন