

মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার জন্য ও দীর্ঘ আলোচনার আবেদন করে যখন সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতির দাবিতে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীরা প্রতিবাদে ব্যস্ত, ঠিক সেই সময় লোকসভায় বিরোধীদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও পাশ হয়ে গেল কেন্দ্রের বন সংরক্ষণ (সংশোধনী) বিল ২০২৩।
বুধবার এই বিল পাশ করার পরই সংসদের নিম্নকক্ষের অধিবেশন আজকের মতো মুলতবি করে দেওয়া হয়। এই বিলের মাধ্যমে ১৯৮০ সালের বন সংরক্ষণ আইনে বেশ কিছু বদল আনা হল, বিশেষজ্ঞদের মতে যে বদল দেশের বন ও জীব-বৈচিত্র্যের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকারক।
দেশের বন ধ্বংস করা প্রতিরোধ করতেই প্রধানত এই ‘বন সংরক্ষণ আইন ১৯৮০’ প্রণয়ন করা হয়েছিল। এবং সেই কাজে এই আইন কতটা সফল হয়েছে সেটা একটি তথ্য থেকেই পরিস্কার হয়, যেখানে এটি প্রণয়নের পর গত ৪০ বছরে মাত্র ১.৫ মিলিয়ন হেক্টর বনভূমি উজাড় করা হয়েছিল। যদিও অন্য একটি রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ সাল থেকে ২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত মাত্র ৪ বছরেই দেশে নানান বন-বহির্ভূত কাজে ব্যবহারের জন্য ৯০ হাজার হেক্টর বন উজাড় করে দেওয়া হয়েছে।
এবার নতুন বন সংরক্ষণ বিলের মাধ্যমে ওই আইনে বেশ কিছু পরিবর্তন করাই ছিল কেন্দ্রের মূল উদ্দেশ্য। বন সংরক্ষণ আইন ১৯৮০ অনুযায়ী, সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া ভারতের সীমান্তের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে বিভিন্ন বন-বহির্ভূত কাজ যেমন দেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রকল্প-সহ হাইওয়ে, রেললাইন, চিড়িয়াখানা, সাফারি ও ইকো-ট্যুরিজমের মতো একাধিক কাজে বনাঞ্চল ব্যবহার করা যাবে না। তার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের অনুমতির প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু এই আইনের সংশোধিত বিলে দেশের সীমান্তের কাছাকাছি বনাঞ্চলগুলি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় গুরুত্বের স্বার্থে কৌশলগত সীমান্তরেখা প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
এদিন যখন বিরোধীরা মণিপুর নিয়ে প্রতিবাদে ব্যস্ত তখন পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব-সহ শাসকদলের মাত্র ৪ জন সাংসদ এই বিলের প্রসঙ্গ তুলতেই ৪০ মিনিটের ভোটাভুটিতেই পাশ হয়ে যায় এই বিল।
এই প্রসঙ্গে পরিবেশ মন্ত্রী জানিয়েছেন, “এই বিলটি কৃষি-বন ও জীব-বৈচিত্র্যকে আরও উৎসাহিত করার জন্য এবং দেশের বৃক্ষের আচ্ছাদনকে আরও বাড়ানোর জন্য আনা হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, এই প্রস্তাবিত বিলটি চরম বামপন্থী অধ্যুষিত সীমান্ত ও সাঁওতাল এলাকায় সড়ক যোগাযোগকে আরও উন্নত করবে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন