

‘‘'নিউ ইন্ডিয়া'-তে স্বচ্ছতারও একটা সীমা আছে। 'সম্পূর্ণ রাষ্ট্রবিজ্ঞান' এটাই শেখায়।’’ শুক্রবার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রি নিয়ে গুজরাট হাইকোর্টের রায়ের পর, এই ভাষাতেই বিজেপি সরকাকে বিঁধেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ।
একইসঙ্গে, এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন কংগ্রেসের মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান পবন খেরা। দিল্লিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ভেবে দেখুন, এই বিষয়টি কেন আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আদালতের উপর অনেক চাপ রয়েছে...। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, তাঁর ডিগ্রি আসল কিনা - এ নিয়ে আদালতে যাওয়া আশ্চর্যজনক।’
তিনি বলেন, ‘ভারতে এই বিষয়টি প্যারাডক্সের মতো। যে দেশে চার কোটি মামলা আদালতে বিচারাধীন, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রী নিয়ে শুনানি হচ্ছে। কেন এই পরিস্থিতি হল, তা আমাদের বুঝতে হবে। 'Entire Political Science’ (সম্পূর্ণ রাষ্ট্রবিজ্ঞান) - একথা আমি কখনও শুনিনি। আপনারা যদি এটি সম্পর্কে শুনে থাকেন তবে দয়া করে আমাকে বলুন।’
গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোদীর 'Entire Political Science’-এর উপর করা ডিগ্রিকে খোঁচা দিয়ে কংগ্রেসের পবন খেরা বলেন, ‘আজকে যদি এমন ডিগ্রি দেওয়া হয়, তাহলে আমি তা নিতে চাই।’
তথ্য জানার অধিকার (RTI) আইনে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিশদ তথ্য জানতে চান দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এ নিয়ে, তৎকালীন কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার (CIC) এম শ্রীধর আচারিউলু প্রধানমন্ত্রীর দফতর, গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রধানমন্ত্রীর স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের ডিগ্রির বিশদ জানাতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু, এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গুজরাট হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়।
এই মামলায় উভয়পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে মামলার রায় সংরক্ষিত রাখা হয়।
শুক্রবার, সেই রায় দিতে গিয়ে তথ্য কমিশনের নির্দেশ খারিজ করে দেন গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণব।
আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রি কাউকে দেখানোর প্রয়োজন নেই।‘ একইসঙ্গে, প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি প্রকাশ করার জন্য সরব হওয়ায় কেজরিওয়ালকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত।
লোকসভা নির্বাচন এবং গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে যতবারই ভোটে লড়েছেন নরেন্দ্র মোদী, প্রতিবারই নির্বাচনী হলফনামায় নিজেকে এমএ (পলিটিক্যাল সায়েন্স) বলে ঘোষণা করেছেন তিনি।
নির্বাচনী হলফনামায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া তথ্য অনুসারে, ১৯৭৮ সালে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘এনটায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্স’-এ স্নাতক এবং ১৯৮৩ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘পলিটিক্যাল সায়েন্স’-এ স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন