
‘আমি যদি দোষী হই, তাহলে আমাকে প্রশ্ন করছেন কেন? যদি পারেন, শুধু আসুন এবং আমাকে গ্রেপ্তার করুন।’ বৃহস্পতিবার, কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি-র সমনকে কটাক্ষ করে এমনই মন্তব্য করেছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন (Chief Minister Hemant Soren)।
তিনি দাবি করেন, ‘একজন আদিবাসী মুখ্যমন্ত্রীকে হয়রানির চক্রান্ত চলছে।’
রাঁচিতে, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ঝাড়খণ্ড সরকারকে অস্থিতিশীল করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করেছে বিজেপি। আমি ইডি এবং সিবিআইকে ভয় পাই না। যাঁরা তাঁদের (পড়ুন- বিজেপির) বিরোধিতা করে, তাঁদের কণ্ঠস্বরকে দমনোর জন্য এইভাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের অপব্যবহার চলছে।’
জানা যাচ্ছে, একটি ‘কয়লা খনি কেলেঙ্কারি’ মামলায় অর্থ-পাচারের অভিযোগ উঠেছে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে, বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাঁচিতে ইডি-র আঞ্চলিক দফতরে হেমন্তকে ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু, তিনি হাজির হননি।
এদিন, রায়পুরে (ছত্তিশগড়) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার আগে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ আনেন তিনি। একইসঙ্গে, ব্যাঙ্ক লুটকারী বড় বড় ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেন তিনি।
২০২১ সালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাঁচি জেলায় একটি ০.৮৮ একর পাথর খাদানের ইজারা দিয়েছিলেন হেমন্ত সোরেন। এই অভিযোগ তুলে হেমন্তের বিধায়কপদ খারিজের দাবী তোলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রঘুবর দাস। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রধানকে।
এর আগে এই মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগী পঙ্কজ মিশ্র সহ আরও দু'জনকে গ্রেফতার করেছে ইডি। গত জুলাই মাসে এই মামলার তদন্তে গোটা রাজ্যজুড়ে তল্লাশি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। সেই সময় মিশ্রের একাধিক ব্যাংক একাউন্ট থেকে মোট ১১.৮৮ কোটি টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি। এছাড়াও তাঁর বাড়ি থেকে আরও ৫.৩৪ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছিল। মিশ্রের বাড়ি থেকে হেমন্ত সোরেনের একটি পাসবুক এবং সোরেনের স্বাক্ষর করা কয়েকটি চেক উদ্ধার করেছে ইডি।
ইডি তাদের চার্জশিটে জানিয়েছে, হেমন্ত সোরেনের রাজনৈতিক প্রতিনিধি পঙ্কজ মিশ্র তাঁর কয়েকজন পরিচিতের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র বারহাইতে অবৈধ খনির ব্যবসা "নিয়ন্ত্রণ" করেন। চার্জশিটে পঙ্কজ মিশ্র ছাড়াও তাঁর দুই সহযোগী বাচ্চু যাদব এবং প্রেম প্রকাশের নাম রয়েছে। এই দুজনকেও গ্রেফতার করেছে ইডি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন